সূচীপত্র
-
গল্প কিছু – অল্প কথায়: শ্রীপর্ণা নিয়োগী শিকদার/ শিশিরকুমার নিয়োগী
-
তিতাস একটি নদীর নাম, একটি নিবিড় পাঠ /অলোক কুমার সাহা
-
Haraprasad Shastri, A study on creative works and literary criticism/ অলোক কুমার সাহা
-
উত্তরবঙ্গের কৃষিজীবন/ডঃ নৃপেন্দ্র লস্কর
-
মেঘ মুলুকের কথা/সুপর্ণা পালচৌধুরী
-
অখিলম্ মধুরম্/লক্ষ্মী নন্দী
-
বসন্তের প্লাটফর্ম/বেলা দাস
-
আমার রূপনগরে লাল ওড়না/সঞ্জয় সোম
-
আমার দ্রোহ আত্মদ্রোহ ও অন্যান্য/সঞ্জয় সোম
-
বিষন্ন সময়/নীলাদ্রি বিশ্বাস
-
শুধু তোমারই জন্য/সমীর কুমার দাস
-
জলজ্যোৎস্নার মেয়ে/মানিক সাহা
-
উত্তরজনপদবৃত্তান্ত/সুবীর সরকার
-
সুরমা কলিং/শৌভিক রায়
পাঠকদের কলম নিঃসৃত কিছু শব্দ যখন সবার অগোচরে মাধুকরীর পাতায় ঝরে পড়ে, ঠিক তখনি প্রবাসী বাঙালিদের সঙ্গে কোথায় যেন একটা সম্পর্কের সূত্রপাত ঘটে। ভৌগোলিক দূরত্বের সীমানা ছাড়িয়ে এমন একটা বাতাবরণ তৈরি হয় যে আমরা পাঠকেরা কাছাকাছি আসি, পরিচিতি ঘটে। অনুপম সৃষ্টির পাশাপাশি সাহিত্য রসের অমৃত ধারায় আমরা অবগাহন করি।
আমরা বাঙালি। তাই বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত আমাদের সত্ত্বা। কর্মসুত্রে আমরা আজ বিচ্ছিন্ন। সারা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকলেও বাংলা সাহিত্যের রূপ-রস-গন্ধে আমরা কিন্তু একই সুত্রে বাঁধা।
এখনো আমাদের সত্ত্বায় রবীন্দ্রনাথ, মাইকেল, বঙ্কিমচন্দ্র, নজরুল বিরাজমান। সুনীল, শীর্ষেন্দু, সঞ্জীব, সমরেশ, জয়-দের সৃষ্টিধর্মী লেখনীর সঙ্গে আমরা যুক্ত। বর্তমান প্রজন্মের শ্রীজাত বাংলা সাহিত্য জগতে এক নতুন সংযোজন।
আমাদের সকলেরই একটু আধটু লেখার অভ্যাস হয়ত আছে। তাই মাধুকরীর মূল লক্ষ্য সাহিত্যের মাধ্যমে এই লেখকদের সঙ্গে প্রবাসী বাঙালিদের একটা মেলবন্ধন তৈরী করা। মানুষে মানুষে হৃদ্যতা বাড়ানোর মূল মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে মাধুকরীর প্রাণশক্তি নিহিত রয়েছে আপনাদের সৃষ্টি, সদিচ্ছা ও ভালবাসায়। আশা রাখি আপনাদের শুভেচ্ছা ও ভালবাসায় আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা সাফল্যমণ্ডিত হয়ে উঠবে।
মাধুকরীর এই আড্ডায় রয়েছেন....
-
লোপামুদ্রা মিত্র (শিল্পী)
-
জয় সরকার (সুরকার)
-
মৃণাল বসুচৌধুরী (কবি)
-
রেহান কৌশিক (কবি)
-
বীথি চট্টোপাধ্যায় (কবি ও লেখিকা)
-
বিভাস রায়চৌধুরী (কবি ও সাহিত্যিক)
-
রাজিয়া সুলতানা (কবি)
-
অমিত গোস্বামী (কবি ও লেখক)
-
সোনালি (কবি)
-
শাশ্বতী নন্দী (গল্পকার ও ঔপন্যাসিক)
-
শ্রীকান্ত আচার্য্য (শিল্পী)
-
উপল সেনগুপ্ত (শিল্পী - চন্দ্রবিন্দু)
-
সৌমিত্র রায় (শিল্পী - ভূমি)
-
অর্চন চক্রবর্তী (শিল্পী - এ ফাইব),
-
গৌতম-সুস্মিত (গীতিকার)
-
মিস জোজো (শিল্পী)
-
প্রসেনজিত মুখার্জী (প্রসেন) গীতিকার
-
শাশ্বতী সরকার (সঞ্চালিকা, আবৃত্তিকার)
-
কুণাল বিশ্বাস, তিমির বিশ্বাস (শিল্পী - ফকিরা)
গৌতম সুস্মিত
সাক্ষাৎকার
প্রায় ১৫০ এর বেশী বাংলা ছবিতে গান লিখেছেন, ১৫টি পুরষ্কার ওনার ঝুলিতে, অসংখ্য বাংলা গানের হিট গানের কথাই গৌতমবাবুর। সেটা তরুণ পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর ছবিই হোক বা আর এক সফল বাঙালি সংগীত পরিচালক জিৎ গাঙ্গুলীই হোক। গৌতমবাবুর এই সফলতার কাহিনী শুনতেই হাজির হয়েছিলাম ওনার হাওড়ার ফ্লাটে। অমায়িক গৌতমবাবুর সঙ্গে কথাতেই জানা গেল অনেক অজানা কাহিনী। মাধুকরীর পুরানো সংস্করণে বেশ কয়েক বছর আগে এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। নতুন সংস্করণে সাক্ষাৎকারটি আবার প্রকাশিত হল।
পুজো কেমন কাটল –
এবারের পুজোটা আমার খুবই ভাল কেটেছে। পুজোতে যা টুকটাক উদ্বোধন করার থাকে সেগুলো তো করেছি। তাছাড়া পুজো পরিক্রমাতে কলকাতা টি ভি আর কলকাতা কর্পোরেশনের জয়েন্টলি শ্রেষ্ঠ শারদ সম্মানের যে আয়োজন করেছিল তাতে বিচারক হিসাবে পঞ্চমী, ষষ্টী, সপ্তমী মিলিয়ে প্রায় ৩২টা পুজো কভার করেছি। কলকাতা পুজোর বেশীরভাগই এখন থিমের ওপর চলে এসেছে। কিছু কিছু সাবেকি পুজোও আছে। আমরা বিশেষ করে বারোয়ারী পুজো কভার করেছি। থিমের মধ্য পরিবেশ, গ্লোবাল ওয়ার্মিং কিছু কিছু ঐতিহাসিক ঘটনার ওপর পেয়েছি। ওভারঅল পুজোটা আমার খুব ভালই কেটেছে।
গান লিখছো কত বছর?
গান লেখাটা আমার একটা কো-ইন্সিডেন্ট বলতে পারো। বম্বেতে আমার এক প্রতিবেশী ছিলেন। যদিও ওখানে এখানকার মত পাড়া কালচার নেই। তবুও আমার পাশে এক বাঙালি পরিবার ছিল। কলকাতা থেকে ত্রিদিব চৌধুরী নামে এক ভদ্রলোক সুরকার হতে বম্বে গিয়েছিলেন। ওনাকে আমি আমার গড ফাদার হিসাবেই দেখি। যেহেতু ছোটবেলা থেকে একটু একটু লেখালেখির কাজ করি তাই আমাকে ডেমো তৈরী করার জন্য কিছু গান লিখতে বললেন। তা গান কি করে লিখতে হয় তা আমি জানতাম না। কিছু দিন উনি দেখিয়ে দেবার পর ব্যাপারটা আয়ত্ব করলাম। সেই থেকে শুরু। সালটা ৯৩-৯৪ হবে ।
এই প্রফেশনে এলে কি এইভাবেই –
ঠিক তাই। ঐ লিখতে লিখতে। উনি সুর করতেন আর আমি লিখতাম। এইভাবেই কেটে যেত।
গানের কথা নিয়ে আজকাল একটু চর্চা হচ্ছে – তোমার কি মতামত
আসলের গানের কথা তো কিছুটা সময়ের ওপর নির্ভর করে। তুমি তো দেখছ এখনকার কথাগুলো কত আলাদা। যে সব কথা আগেকার সময় ছিল না এই যুগের কাছে আছে। বলতে গেলে অনেক কিছুই তো নেই। সেই শিল্পী কোথায়, সেই উত্তম কুমার নেই। এমন তো নয় শুধু গানের কথার মান নেমে গেছে আর সব ঠিক আছে। সেই পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, গৌরিপ্রসন্ন –রা নেই। একটু খেয়াল করে দেখ ইংরাজী গানের ক্ষেত্রেও হয়েছে। পুরোন দিনের কথায় যে ডেপথ ছিল এখন তা নেই। আমার তো মনে হয় যুগ অনুযায়ী গানের কথা ঠিক আছে।
জিৎ গাঙুলীর সুরে তোমার বেশ কিছু হিট গান। তুমি থাক হাওড়ায় আর জিৎ বম্বে, কর্ডিনেট করো কি করে?
হ্যটস অফ জিৎ। স্যালুট করা উচিত। জিৎ একটা মরা গাঙে জোয়ার এনেছে। একটা ট্রেন্ড সেট করেছে। মাঝখানে বাংলা ছবির গান শ্রোতারা শুনতেন না । জিৎ আসাতে এই ব্যাপারটা অনেকটার পরিবর্তন ঘটেছে। জিৎ বম্বে থাকলেও আমি কলকাতায় ওর সঙ্গে বসি। আমার লেখা নিয়ে ও বম্বে গিয়ে ট্র্যাক তৈরি করে। যখন বম্বে যাই ওর সঙ্গে রোজই কন্ট্যাক্ট থাকে। কোন পরিবর্তন করতে হলে একসঙ্গে করতে এক সঙ্গে করে ফেলি।
কাজ করতে করতে এমন কোন সিচুয়েশন এসেছে যে তোমাকে ইমিডিয়েট কিছু একটা করতে হবে, আর পুরো প্রজেক্ট তো তোমার জন্য অপেক্ষা করছে – একবার তো শুনেছিলাম...
পুজোর একটা অ্যালবামে এরকম একটা সিচুয়েশন হয়েছিল। এই অবস্থা আগেকার দিনের মানুষ ভাবতেই পারতেন না। আমার কাছে একটা বম্বের মিউজিক কম্পানির ফোন এসেছিল। দু-ঘন্টার মধ্যে ১২টা গান চেয়েছিল। ভেবে দেখ তুমি মাত্র!!! ২ ঘন্টা ... গান গাইবেন কুমার শানু, সুরকার বাবুল বোস।
"সুর করেছিলেন বাবুলদা, বাবুল বোস। উনি বাবুলদাকে বললেন – ‘কেমন লাগছে তোর’? বাবুলদা বলল – ‘না তো দিদি ঠিকই তো আছে’। আশাজী বলে উঠলেন – ‘যাঃ তোদের সব কান খারাপ হয়ে গেছে। আমি ভুল গেয়েছি আমি আবার গাইব’। উনি আবার ফ্লোরে গেলেন, বাবুলদা আমাকে বলল – দেখলি কি ডেডিকেশন। এর যদি শতকরা পাঁচ ভাগও আজকালকার শিল্পীদের থাকে না সে উতরে যাবে। গানটা যা ভুল আছে বলে দিদি বলছিলো না, সেটা কোন ভুলই না"
অ্যালবামটা নাম কি?
‘উল্টোপুরাণ’। এটা টি সিরিজ থেকে বেরিয়েছিল। যে সময় ফোনটা এসেছিল তখন আমি কলকাতায়, বাবুলদা ছিলেন বম্বেতে আর শানুদা ছিলেন মিডিল ইষ্টে, কাতারে। শুধু তাই নয় শানুদা আরো কয়েকটা দিন কাতারে থাকবেন। ভাবতে পারো দু-দিনের মধ্যেই আমাদের প্রজেক্টটা শেষ হয়। শানুদা কলকাতায় এসে ডাব করেন আর সেই অ্যালবাম ‘উল্টোপুরাণ’ পুজোতে রিলিজ করে। পরে কলকাতায় প্রেস কনফারেন্সে শানুদার পাশে বসে এই কথা বলেছিলাম। আজকালকার দিনে সিস্টেমটা এত ডেভালপ্ট হওয়াতে এটা সম্ভব।
এ তো গেল তোমার বাংলা আধুনিক গানের কথা, শুনেছি বাংলা সিনেমার গানের ক্ষেত্রেও তাই হয়...
হয় তো প্রচুর হয়। আমি একটা ঘটনার কথা বলছি। এই বছরেই রিলিজড ছবি ‘বল না তুমি আমার’ ছবির টাইটেল সং ‘মানে না মানে না, মানে না কোন বারণ’ এর গল্পটা বলি। গানটার ডাবিং হয়ে গেছে। পুরো ইউনিট সিংগাপুরে শুটিং এ চলে গেছে। দেব হল ছবির নায়ক। রাত্রি বারোটা নাগাদ সুরকার জিৎ গাঙুলী ফোন করে জানালো – পুরো মুখরাটাই চেঞ্জ করতে হবে। আমি লিখে ওকে ফোনে জানালাম। ও শিল্পী ডেকে আনলো। রাত তিনটের সময় সেই গান চলে গেল শুটিং এর জন্য। পরেরদিন শুটিং হল। মাঝে মধ্যেই এই ধরনের চাপে কাজ করতে হয়।
এখন কি করছ?
কিছু কিছু ছবির কাজ চলছে। নামগুলো বলতে পারছি না। কারণ সবগুলো আন টাইটেল্ড অবস্থায় রয়েছে। পরপর প্রায় দশ বারোটা ছবি বেরবার কথা। তামিল ছবি ‘পকিজম’ এ আমার একটা বাংলা গান আছে। বাঙালি মেয়ে একটা তামিল ছেলেকে ভালবাসে। ছবিতে ঐ নায়িকা একটা বাংলাতে গান গাইবে। সুর করেছেন সাবেশ মুরলি বলে একজন।
বাংলা গান লিখছ তো বেশ কয়েক বছর – ভবিষ্যৎ কেমন?
আমার তো মনে হয় বেশ ভাল। কিছু কিছু গান মানে জীবনমুখী এসেছিল আবার চলেও গেছে। ব্যান্ডের বাজার চললেও সেই ভাল বাংলা মেলোডি গান, মিষ্টি মিষ্টি গানের কথা কিন্তু সারাজীবন থেকে যাবে।
বাংলা গীতিকারদের মধ্যে কার লেখা তোমাকে অনুপ্রাণিত করে? হিন্দীতে কাকে গুরু মানো?
কিছু কিছু লেখা সবারই তো ভাল। গৌরিপ্রসন্ন মজুমদার আই লাইক মোস্ট। হিন্দীতে বলতে পারো আনন্দ বক্সী।
"পুজোর একটা অ্যালবামে এরকম একটা সিচুয়েশন হয়েছিল। এই অবস্থা আগেকার দিনের মানুষ ভাবতেই পারতেন না। আমার কাছে একটা বম্বের মিউজিক কম্পানির ফোন এসেছিল। দু-ঘন্টার মধ্যে ১২টা গান চেয়েছিল। ভেবে দেখ তুমি মাত্র!!! ২ ঘন্টা ... গান গাইবেন কুমার শানু, সুরকার বাবুল বোস
গান লেখার বাইরে কিছু করো?
ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই রে ভাই। অনেকটা সময় গানের পিছনেই চলে যায়। ছবির স্ক্রিপ্টের অফার এলেও হাতে সময় থাকে না।
তোমার লেখা কয়েকটা অ্যালবামের নাম বল?
শানুদার ‘উল্টোপুরাণ’, কবিতার ‘অনুরাগী আমি’। তাছাড়া নতুন কিছু শিল্পীদের আছে। তাছাড়া ‘পালটে গেল দিন’ বলে একটা অ্যালবাম করেছি। শিল্পী তাপসী চৌধুরী। উনি অভিনেত্রী হিসাবে পুরোনো। গানটা ওনার একটা ট্যলেন্ট বলতে পারো। ওনার সঙ্গে অনেক বড় শিল্পীই গেয়েছেন। শানুদাও আছেন।
সুরকার জিৎ গাঙুলী সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা –
ওকে আমি সুরকার জিৎ গাঙুলী হওয়ার আগে থেকেই চিনি। আমরা খুবই ফ্রেন্ডলি পরিবেশে মধ্যেই কাজ করি। আর ওর সঙ্গে সিটিং করতে গেলে ও এত খাওয়ায় যে কি বলবো। পাঁচ মিনিট অন্তর অন্তর বলে গৌতম এটা খাবে ওটা খাবে। গুড হিউম্যান বিং।
আর পরিচালক ‘রাজ চক্রবর্তী’..
রাজের প্রথম তিনটে ছবিতে আমি কাজ করেছি। ও খুব ভাল পরিচালক। ওর মধ্যে একটা ভাল কিছু করার খিদে আছে। ও কি করতে চাইছে সেটা ওর কাছে খুবই পরিষ্কার। কয়েকটা ছবির সিটিং এ ওকে দেখেছি, ও খুবই ভাল ছেলে। ওর মধ্যে কোন কনফিউশন দেখিনি।
আশা ভোঁসলের সঙ্গে ও তো কাজ করেছ, তোমার লেখা গানও তো উনি গেয়েছেন...
আশাজীর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা ভালই। ওনার সঙ্গে আমি প্রথম কাজ করি প্রসেঞ্জিত আর রচনার ‘অন্ধ প্রেম’ ছবিতে। উনি দুটি গান গেয়েছিলেন। শানুদার স্টুডিও তে রেকর্ডিং হচ্ছিল। তা আশাজী আসবেন বলে অন্য শিল্পীদের ডাকা হয় নি। উনি আসার পরই সবার সঙ্গে আলাপ করে দিলেন। আমার প্রথম গানের কথা ছিল – ‘ভালবাসি কথাটা সোনা মুখে বলতে নেই, চোখে চোখে যা দেখা, মনে মনে যা বোঝা বুঝে নিলে যেই, ভালবাসি কথাটা সোনা মুখে বলতে নেই’। শানুদার সঙ্গে ডুয়েট। গানটা রেকর্ড হওয়ার পর আশাজী গানটা পুরোটা শুনলেন। তারপর উঠে স্টুডিওর দরজাটা একটু ফাঁক করে বাইরে গিয়ে বললেন আবার চালাও গানটা। ফিরে এসে সুরকারকে বললেন –
সুরকার কে ছিলেন –
সুর করেছিলেন বাবুলদা, বাবুল বোস। উনি বাবুলদাকে বললেন – ‘কেমন লাগছে তোর’?
বাবুলদা বলল – ‘না তো দিদি ঠিকই তো আছে’। আশাজী বলে উঠলেন – ‘যাঃ তোদের সব কান
"আসলের গানের কথা তো কিছুটা সময়ের ওপর নির্ভর করে। তুমি তো দেখছ এখনকার কথাগুলো কত আলাদা। যে সব কথা আগেকার সময় ছিল না এই যুগের কাছে আছে। বলতে গেলে অনেক কিছুই তো নেই। সেই শিল্পী কোথায়, সেই উত্তমকুমার নেই। এমন তো নয় শুধু গানের কথার মান নেমে গেছে আর সব ঠিক আছে"
খারাপ হয়ে গেছে। আমি ভুল গেয়েছি আমি আবার গাইব’। উনি আবার ফ্লোরে গেলেন, বাবুলদা আমাকে বলল – দেখলি কি ডেডিকেশন। এর যদি শতকরা পাঁচ ভাগও আজকালকার শিল্পীদের থাকে না সে উতরে যাবে। গানটা যা ভুল আছে বলে দিদি বলছিলো না, সেটা কোন ভুলই না।‘ সত্যি কথা বলতে কি আশাজী নিজের ওপর এতটাই নির্মম ছিলেন যে তিনি আবার সেটা গাইলেন। তবে আমাদের একটা ভয় ছিল। আশাজী ধূপের গন্ধ একদম সহ্য করতে পারতেন না। আমরা সেদিন ফ্লোরে কোনরকম রুম ফ্রেসনার ব্যবহার করি নি। শানুদার স্টুডিওটা নতুন হওয়াতে একটা নতুন কাঠের গন্ধ ছিল। শানুদারও এটা নিয়ে একটু দ্বিধা ছিল যে আশাজী আবার চলে না যান। তবে তেমন কিছু ঘটে নি।
শানুদাকে নিয়ে কিছু বল?
শানুদা আমার খুবই প্রিয় শিল্পী। আমি শানুদাকে ব্যক্তিগতভাবে খুব ভালভাবেই জানি। শানুদার সুরে ‘বেশ করেছি প্রেম করেছি’ ছবিতে আমিই গান লিখেছি। মানুষ হিসাবে শানুদা খুবই ভাল। ভীষণ আবেগ প্রবণ। চট করে সবাইকে ভালবেসে ফেলেন। জীবনে হয়ত অনেক আঘাত পেয়েছেন। ভগবান অন্যদিকে শানুদাকে হাত খুলে দিয়েছেন। শানুদার মধ্যে আমি ‘কুমার শানু’ ব্যাপারটা দেখি নি। যদি তুমি ওনার কাছে যাও তোমার কখনই মনে হবে না যে এত বড় এত সফল একজন শিল্পীর সঙ্গে বসে আছ। গানের ব্যপারে আর কি বলব বল তো, সে তো তুমিও জানো। কথা বলে বোঝানো যাবে না।
আটলান্টায় শানুদা একবার শিল্পী প্রিয়া ভট্টাচার্য্যের সঙ্গে প্রোগ্রাম করছিল। ‘শাস ভি কভি বহু থি’ সিরিয়ালে গান গেয়ে প্রিয়া বেশ নাম করেছিলেন। উনি বলছিলেন শানুদা যখন স্টেজে গাইছিলেন তখন মনে হচ্ছিল প্রতিটি শব্দেই যেন রোমান্স উথলে পড়ছে। এতটাই আবেগপ্রবণ মানুষ শানুদা।
আর একটা ঘটনার কথা বলছি। বম্বেতে জলাসাঘর বলে শানুদার একটা অ্যালবাম বেরিয়েছিল। অ্যালবামটাতে রতন সাহার লেখা একটা গান ছিল ‘জানি না তোমার সাথে হবে না আর দেখা’। রিলিজের আগে আমি একটা কপি পেয়েছিলাম। এই সময় শানুদাও তার ব্যাক্তিগত জীবনে একটা ঝড় সামলাচ্ছেন। ডিভোর্স চলছে। ছাড়াছাড়ির পর্যায়ে চলে গেছে। মিডিয়াও এই