প্রচ্ছদ - সুরজিৎ সিনহা
পুজো বার্ষিকী
১৪৩০
কবিতা
কবিতা
প্রচ্ছদঃ সুরজিত সিনহা
লেখক/লেখিকাবৃন্দ
প্রবন্ধ
'মানুষ মানুষের জন্য', এই গানটাই প্রথম মনে এসেছিল ভাসমান নৌকায় ভাসতে ভাসতে এক আকস্মিক প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে। আর তারই ফসল আজকের এই বাড়তি পাওনা, অপূর্ব এক সবুজ দ্বীপ ভ্রমণ।
মাঝে মাঝে যেমন ঘরের ফার্নিচারের অ্যারেঞ্জমেন্ট বদলালে নতুন ঘরে বাস করছি বলে মনে হয় তেমনই মনকে সতেজ রাখতে স্থানান্তরের দরকার পড়ে, সেটা নিকট হোক বা দূর যাই হোক না কেন।
ইদানিং কর্মস্থল পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম সীমানায় অবস্থানের সূত্রে এক অন্য দুয়ার খুলে গেছে আপনা থেকেই। সেই মতো আজকের গন্তব্য আসামের এক বহু প্রাচীন বন্দর শহর, ধুবড়ি। যার সাথে জড়িয়ে আছে পৌরাণিক লোকগাথা, ব্রিটিশ আমলের আন্তর্জাতিক নদী বন্দর, ম্যাচ ফ্যাক্টরি, গুরু নানকের পদধূলি থেকে দেবদাস খ্যাত প্রমথেশ বড়ুয়ার নাম।
যাত্রাপথে একে একে পেরিয়ে চললাম তুফানগঞ্জ, বক্সিরহাট, হালাকুড়া, আগমনী প্রভৃতি জনপদ। একেবারেই সাদামাটা মফস্বলি জায়গা, জনজীবন চলছে আপন ছন্দে। রাস্তাঘাট এবং গ্রামাঞ্চল দেখে বোঝা যাচ্ছে জায়গা গুলো মুসলিম অধ্যুষিত। ধুবড়ি জেলা ভারতের মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলা সমূহের মধ্যে অন্যতম। এরই মধ্যে কখন রাস্তার পাশে রেললাইন সঙ্গী হয়েছে। রাস্তার দুপাশে মান্দার ফুলের স্নিগ্ধ লালে চোখে ঘোর লাগার উপক্রম। ফাগুনের শেষে নিম্ন আসামের গোয়ালপাড়া ও ধুবড়ির দিকে মান্দার গাছে আগুন রঙা ফুলের আধিক্য চোখে পড়ার মতো।
এসে পড়লাম গৌরীপুর, যার নাম বহু আগে থেকেই শুনে আসছি নানাভাবে। এখানকার রাজবাড়ির সন্তান প্রমথেশ বাবু, তার ভাই হস্তি বিশারদ লালজি অর্থাৎ প্রকৃতীশ বড়ুয়া তথা ওনার কন্যা 'মাহুত বন্ধু রে' খ্যাত প্রতিমা বড়ুয়া সকলেই নিজ ক্ষেত্রে বিখ্যাত।
আসলে গৌরীপুর আর ধুবড়ি হল যমজ শহর। সামনের রাস্তা চলে গিয়েছে গুয়াহাটি অভিমুখে। আমরা গৌরীপুর থেকে ডাইনে টার্ন নিলাম। অনেক আগে থেকেই রেললাইন সাথে সাথে চলছিল, এখন রাস্তার বাঁ পাশে যোগ দিল গদাধর নদী যেটা ধুবড়িতে ব্রহ্মপুত্রে মিশেছে। বর্ষায় এর রূপ একদমই আলাদা, তখন গৌরীপুর ও ধুবড়ির অনেক স্থান বানভাসি হয় এর প্রকোপে। একপাশে রেললাইন অপর পাশে নদীকে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছে গেলাম ধুবড়ি।
শহরে এখনো পুরনো রিক্সার চল, টোটো এখনো টো টো করে ঘুরতে শুরু করেনি।
রিক্সা ধরে এগিয়ে চললাম ঘাটের দিকে, রাস্তার দুপাশে চোখে পড়ছে নতুন ও পুরোনো বাড়ির মিশেল। রিক্সাওয়ালাকে এখানের ম্যাচ ফ্যাক্টরির কথা জিজ্ঞেস করাতে বললো যে সেটা তো অনেকদিন থেকে বন্ধ। কথার মধ্যে কোথাও একটা কষ্ট লুকিয়ে আছে মনে হলো। হয়তো এই ফ্যাক্টরির সাথে জড়িয়ে ছিল তার সম্পূর্ণ পরিবারের জীবন যেটা বন্ধ হওয়াতে তাকে এই জীবিকা বেছে নিতে হয়। সত্যিই একসময় সারা ধুবড়ি পরিচিত ছিল এই ম্যাচ ফ্যাক্টরির জন্য। ১৯২৬ সালে সুইডিশ কোম্পানি ১৩২ বিঘা জমিতে স্থাপন করে এই ম্যাচ ফ্যাক্টরি, তখন নাম ছিল Assam match factory। সে সময় ২০০০ শ্রমিক কাজ করতো তাতে। পরে ১৯৭৯ সালে এর নাম হয় WIMCO বা Western India Match Factory। পরে ১৯৯৭ সালে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে, সংরক্ষিত জঙ্গলের গাছ কাটা যাবে না আর তারই প্রভাব এসে পড়ে এই ম্যাচ ফ্যাক্টরিতে এবং সে বছরই পুরোপুরি ভাবে বন্ধ হয়ে যায় এই শতাব্দী প্রাচীন কারখানাটি।
এরই মধ্যে এসে পৌঁছলাম বিখ্যাত নেতাই ধুবুনীর ঘাটে। কথিত আছে সাপের দেবী মনসার ভগ্নী ছিলেন নেতাই, একজন ধুবুনী বা ধোপানী। নেতাই এর পরামর্শ মতে সতী বেহুলা তার স্বামী লখীন্দরের জীবন, যমের হাত থেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিল। এই নেতাই ধুবুনীর কাপড় কাচার ঘাট ছিল এখানে ব্রহ্মপুত্রের তীরে। ঘাটে অবস্থিত প্রকান্ড এক পাথর, যেটার উপরে কাপড় কাচা হতো, এখনো রয়েছে সেটা সংরক্ষিত অবস্থায়। আর এই ধুবুনী শব্দ থেকেই ধুবড়ি নামের উৎপত্তি বলা হয়।
কিছুক্ষণ বসে রইলাম ব্রহ্মপুত্রের অপার জলরাশির দিকে চেয়ে, পাশেই গদাধর এসে মিশেছে। স্লেট রঙা জলে ছায়া দোলে, ভাঙে, চুরমার হয়। ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে দাঁড়িয়ে দূরে গারো পাহাড়ের রেখা দৃশ্যমান। আহা, এ দৃশ্য যে ভোলার নয়। এতকিছু চোখের সামনে, ভাবতেই মন অনাবিল এক আনন্দে নেচে ওঠে অর্থাৎ আমি সঠিক জায়গায় এসে পৌঁছেছি। পাশেই রাহুল দেব বর্মণের নতুন বসানো আবক্ষ মূর্তি স্বভাবতই মন ভালো করে দিল, তাঁর সুরে মজে ছিল একসময় আসমুদ্রহিমাচল ভারতবাসী। আমিও তো সেই সাত বছর বয়স থেকে মজে মেহবুবার 'মেরে নয়না শাওন ভাদো' শোনার পর থেকে। যে কোন ভ্রমণ কাহিনী তো আসলে আত্মজীবনীরও একটা টুকরো।
কোনও নতুন জায়গা দেখতে হলে পায়ে হেঁটে ঘোরাই প্রকৃষ্টতম, তাই নদীর ধার বরাবর হাঁটা দিলাম। এ শহরের সাথে আমার দেখা চন্দননগরের মিল রয়েছে কিন্তু ব্রহ্মপুত্রের সাথে কারো কোনো তুলনা চলে না। কেউ কেউ নদ হয়ে জন্মায়, অন্যরা নদী। জনমানসে ভাবমূর্তিকে চাঙ্গা করে রাখতে রাখতে খানিকটা পুরুষালী গাম্ভীর্য ক্রমশ তার মজ্জায় ঢুকে পড়ে। তাই একটু এগিয়েই বিরাট ব্রহ্মপুত্র চলে গিয়েছে বাংলাদেশে, নারী হওয়ার বাসনায়। এতো দিনের পৌরুষ ত্যাগ করে সে সেখানে উচ্ছল যুবতী যমুনা।
এখানে তীর বরাবর এক একটি প্রশাসনিক দপ্তর, বেশ জমজমাট এ চত্বর। চোখে পড়লো কাঠের তৈরি অপূর্ব সার্কিট হাউস, কিছুক্ষণ আমাকে স্থবির করে রাখলো এই অসাধারণ কাঠের তৈরি ইমারত। এখানকার পৌরসভা ১৮৮৩ সালের, স্বভাবতই এক পুরাতনী জৌলুসপূর্ণ ছাপ রয়েছে সারা শহর জুড়ে। পাশেই ভূমিপুত্র ভুপেন হাজারিকার বিশাল মূর্তি। ভালো লাগলো যে মূর্তিতে পাখিদের আদরের চিহ্ন লেগে নেই। এগিয়ে চললাম নদীর তীর বরাবর। অচেনা, অজানা জায়গায় একা একা হাঁটতে ভারী ভালো লাগে। একা তো নয়, যেন নিজেকেই নিজের মধ্যে পরিপূর্ণ রূপে পাওয়া।
একটু পরেই এসে পড়লাম বিশালাকার গুরুদোয়ারার সামনে। ধুবড়ির অন্যতম প্রধান আকর্ষণ এই গুরু তেগ বাহাদুর সাহিব গুরুদোয়ারা। গুরু নানকের পবিত্র চরণধূলি মিশ্রিত এই মাটি। গুরু তেগ বাহাদুরও এসেছিলেন এই বন্দর নগরীতে। শিখ ধর্মাবলম্বীদের কাছে বড়ই পবিত্র এই ভূমি, অন্যান্য ধর্মের মানুষরাও এখানে শ্রদ্ধার সাথে আসেন। গেট পেরিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলাম, সামনে বিশাল প্রশস্ত চত্বর। একদিকে মূল মন্দির অপরদিকে লঙ্গরখানা সহ উপরে থাকার জায়গা।
জুতো খুলে, হাতে পায়ে জল দিয়ে, মাথার চুল ঢেকে প্রবেশ করলাম মূল মন্দিরে। আরাধনা চলছে ভিতরে, চারিদিক ঘুরে দেখলাম। অপূর্ব সব নকশা কারুকাজে সজ্জিত উপাসনাগৃহটি। আর এখানের প্রসাদ মানেই তো ঘিয়ে মাখোমাখো হালুয়া।
পাশে অফিস ঘর, ভিতরে গেলাম থাকার কি নিয়ম জানতে। যিনি ছিলেন তিনি সুপ্রসন্ন মুখে আমার দিকে চেয়ে বললেন 'আগে নাস্তা তো করে নেন'। খিদেও পেয়েছিল, তাই বাধ্য ছাত্রের মতো ওনার কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে চললাম লঙ্গরখানার দিকে। যাওয়া মাত্রই আমাকে থালা নিতে বললেন। থালা নিয়ে বসে পড়লাম, পরিবেশিত হল রুটি, তরকা জাতীয় ডাল ও পায়েস। খেতে খেতে মনে পড়ছিল অমৃতসরের কথা, ওখানের বিশালাকার লঙ্গরখানার কথা। স্থানীয়দের কাছ থেকে জেনেছিলাম ওখানের প্রত্যেক বাড়ির মেয়ে, বৌমা বা শাশুড়ি কেউ না কেউ রোজ এসে এখানে সেবা দিয়ে যান। কথাটা শুনে খুব ভালো লেগেছিল, প্রত্যহ এমন সদ্ অভ্যাসের কথা ভেবে। যাইহোক এর মধ্যেই একজন চা দিয়ে গেল। পেটপর্ব সমাধা করে বের হলাম গুরুদোয়ারা থেকে।
কিছু দূর গিয়ে দেখি রাস্তার পাশেই এক ছিমছাম ব্রাহ্মমন্দির। চারপাশ সবুজ গালিচার মতো ঘাসে ভরা। লেখা রয়েছে স্থাপনা কাল, ১৮৭৫। বন্ধ দরজার সামনে বসে পথচলতি এক কিশোর কিছুটা জিরিয়ে নিচ্ছে। স্থাপনা কাল দেখেই মন এক ঐতিহাসিক হিসেব মেলাতে শুরু করলো। পড়েছিলাম যে ব্রহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র সেনের কন্যা সুনীতি দেবীর বিবাহ হয় কুচবিহারের রাজা নৃপেন্দ্রনারায়নের সাথে ১৮৭৮ সালে। কেবল কন্যার বিবাহ নয়, সঙ্গে সঙ্গে কেশববাবু নূতন ধর্ম ও নীতি কুচবিহারে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাহলে কুচবিহার থেকে মাত্র ৮০ কিমি দূরের ধুবড়িতে তারো আগে ব্রাহ্মমন্দির প্রতিষ্ঠা হলো কার দ্বারা। এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া খুবই কঠিন কারণ এখন যে প্রকৃত সিধুজ্যাঠার বড়ই অভাব। যাইহোক এসব ভাবতে ভাবতেই এগিয়ে চললাম সামনের দিকে।
এখানের যাত্রী পরিবহনের মূল ঘাটটি হলো যোগমায়া ঘাট। সারি সারি লঞ্চ, নৌকা দাড়িয়ে রয়েছে। চারিপাশ থিকথিক করছে মানুষ জনে। সবার মধ্যেই ব্যস্ততা, কেউ ঘাটে নেমে শহরে আসছে তো কেউ লঞ্চ ধরতে ছুটছে। তারই মধ্যে চলছে হরেকরকমের বিকিকিনি, জোরকদমে। ঘাটের দুইপাশে সারি সারি খাওয়ার হোটেল, তাতেও ব্যস্ততা। প্রত্যেক হোটেলের খদ্দের ধরার তৎপরতা চোখে পড়ছে, কর্মচারীরা মেনু শুনিয়ে যাচ্ছে গড়গড়িয়ে। যেন এ এক অন্য ভারত চাক্ষুষ করছি
আমি। নিজেই মনে করার চেষ্টা করছি, এমন কি কখনো পেয়েছি আগে? না। তবে এমন বর্ণনা অনেক পড়েছি বইয়ে। সবই পূব বাংলা তথা পরের বাংলাদেশ কেন্দ্রিক লেখায় জাহাজঘাটার বর্ণনায়। তবে পড়ার সময় লঞ্চঘাটার সুস্বাদু খাবারের কথা শুনে যেভাবে জিভে জল আসতো, সেটা আর হলো না গুরুদোয়ারার উদরপূর্তি ও হোটেলের পরিবেশ দেখে। এক একটা লঞ্চ থেকে প্রায় ৫০০ মানুষ নামছে, হয়তোবা বেশীও হতে পারে। আসছে তারা তিন চার ঘন্টার পথ অতিক্রম করে ফুলবাড়ি, হাটসিংমারি থেকে। একটা লঞ্চ দিনে একবারই যাতায়াত করে। প্রত্যেক লঞ্চ বা নৌকায় উড়ছে ভারতীয় পতাকা তার নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য। সত্যিই এ এক অন্য জগৎ, এখানে না এলে এক অন্য ভারত এদেখা থেকে যেত। যাত্রীরা যেখানে অপেক্ষা করছে লঞ্চ ধরার জন্য, সেরকম একটা জায়গা বেছে একটু বসলাম। যদিও সেটা আমার কাছে অবজারভেশন ব্যালকনি বলা যায়। ফুরফুরে হিমেল হাওয়া বইছে চারিপাশে। সূর্য মাথার ওপরে, তবে এ রোদ কষ্ট দেয় না, এখনো শীত এদেশে। তবে যেটা মনে হচ্ছে শুধুমাত্র আমারই কোন গন্তব্যে পৌঁছবার তাড়া নেই। খবরদারি নেই ঘড়ির ওপর। মূল্যবান সময়কে পথের মেজাজের উপর ছেড়ে দিয়ে উদ্দেশ্যহীনতাকে পাথেয় করে এরকম বিরতির মজাই আলাদা।
ঘড়িতে এখন সাড়ে ১০টা বাজে, এগিয়ে গেলাম লঞ্চের খবর নিতে যদি কাছাকাছি কোথাও যাওয়া যায়। তবে খবর আশাপ্রদ নয়, কারণ এখানের প্রত্যেকটা লঞ্চ, যেটা যাবে তার গন্তব্যে, সে আর আজকে ফিরবে না কারণ যাত্রাপথ প্রত্যেকের কম বেশি তিন থেকে পাঁচ ঘন্টা। ধুবড়ি থেকে একমাত্র একটা লঞ্চ সকাল ৮টায় ছেড়ে হাটসিংমারি পৌঁছায় পৌনে ১২টায়। আবার সেটা ২টোয় ছেড়ে ধুবড়ি ফিরে আসে সন্ধ্যা ৬টায়। ধুবড়ি থেকে অফিস যাত্রীরা এটাতেই অফিস করে। হাটসিংমারি জায়গাটা হচ্ছে এক নদীবন্দর শহর যার অর্ধেকটা আসাম আর বাকি অর্ধেকটা মেঘালয়। কি, শুনেই যেতে ইচ্ছে করছে না এমন এক দিকশূন্যপুর দেশে। আমি আজ ফিরবো মনস্থির করে এসেছি, তাই ও পথে আর পা বাড়ালাম না কিন্তু যাব তো অবশ্যই একদিন। তাই বিফল মনোরথে ফিরে এলাম আগের স্থানে। এদিকে মন বলেই চললো যে হাতে কিন্তু সময় আছে তাই আবার খবরাখবর নিতে পাশের নৌকা ঘাটে গেলাম। আমার প্রোগ্রাম তাদের বলাতে, তারা বললো তাহলে নৌকা করে সামনের চরটা ঘুরে আসুন না। জিজ্ঞেস করে জানলাম ১১টায় যে নৌকা যাবে সেটি সামনের চরে পৌঁছাবে পৌনে ১২টা নাগাদ। তারপর সেটা ফিরে আসবে ১২টাতে আর ধুবড়ি পৌঁছাবে সাড়ে ১২টা নাগাদ।
সেই মতো নৌকায় চেপে বসলাম। নৌকার সকলেই প্রায় সামনের চরগুলোর বাসিন্দা, নানা বয়সের মহিলা পুরুষ। আপন আপন দলে গল্প বেশ জমিয়ে চলছে। মাঝে ঝালমুড়িওয়ালা এরই ফাঁকে যাত্রী টপকে বিক্রি করে চলেছে। সকলেই মুসলিম সম্প্রদায়ের, পুরুষদের অনেকের কাঁধে আসামের বিখ্যাত গামোছা জড়ানো। কোথাও যাওয়ার রাস্তায় সামনের অচেনা নারী পুরুষের চরিত্র, জীবিকা ও পাশাপাশি দুজনের মধ্যে সম্পর্ক ইত্যাদি নিয়ে ধারণা করে নি। অনেকসময় তা মেলে আবার কখনো তা মেলে না। তবু মনে মনে এই রকম অনুমানের খেলা খেলতে বেশ লাগে। যাত্রী বসার পর নৌকা ভরতে থাকলো নানারকম মালপত্রে, গ্রোসারি সামগ্রী থেকে ঝাঁকা ভর্তি মুরগী কিছুই বাদ থাকলো না। এরপর নৌকা ঘাট থেকে বেরোলো অনেককে পাশ কাটিয়ে, মাঝে মাঝে এক দুটো টক্কর যে লাগলো না তা নয়। নৌকা এবার মূল নদীতে এসে পড়লো। নৌকায় বেরিয়ে বুঝলাম, লঞ্চ ভ্রমণের সাথে এর কোনও তুলনায় হয় না। নৌকোয় বসে নদীকে অনেক বেশী কাছে পাওয়া যায়। চারিদিকের গল্পের মাঝে আমিই একমাত্র নদীকে দুচোখ ভরে চাক্ষুষ করছি কারণ বাকিদের তো এটা রোজনামচা। হাওয়ায় বেশ শীত শীত ভাব, মাঝে মাঝে ঝাঁকা ভর্তি মুরগী থেকে আসা বাতাস, আমাকে কল্পনার জগৎ থেকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনছে।
এরই মধ্যে আমার পাশে বসা এক পরিবারের একটা ২৫-২৬ বছরের সুশ্রী যুবক মাঝে মাঝে আমার দিকে তাকাচ্ছে। তারপর হঠাৎ জিজ্ঞেস করলো 'আপনি কি হাসপাতাল যাবেন?' আমি না বলে, তার এই উদ্ভট প্রশ্নের কারণ জানতে চাইলাম। তখন সে বললো যে, সামনের চরে তার বাড়ি। ওখানের গ্রামীণ হাসপাতালে মাঝে মাঝে ধুবড়ি থেকে ডাক্তার বাবুরা আসেন। আমাকে সে ডাক্তার ভেবেছিল। হঠাৎ আমার চোখের সামনে ভেসে উঠলো সেইসব পরীক্ষার দিন গুলোর কথা, যদিও জানি ডাক্তারী পরীক্ষা আমার পক্ষে একটু হেভিই ছিল। ক্লোজ বন্ধু ডাক্তার হলে পার্থক্যটা আরো ভালো বোঝা যায়। শুধু মাথায় ঢুকছিল না হঠাৎ করে পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে আসামে ডাক্তারী করতে আসার ব্যাপারটা। আবার মুরগীর ঝাঁকার আমিষ হাওয়া আমাকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনলো।
এরপর আমাদের মধ্যে কথাবার্তা জমে উঠলো। সে বললো তার নাম সোহন হোসেন। সামনের স্থলভূমি দেখিয়ে বললো আগে ওখানে ওদের বাড়ি ছিল, এখন গৌরীপুরে থাকে, পড়াশোনা করে ব্যাঙ্গালোরে। মাকে নিয়ে দিদির বাড়ি চললো। আমার কাছে প্রোগ্রাম শুনলো যে সামনের চর ঘুরে এই নৌকাতেই ধুবড়ি ফিরে যাব। এরই মধ্যে নৌকা মাঝ নদী পেরিয়ে তীরের দিকে চলেছে। নদীর স্রোতধারার বুকেই পাশাপাশি এই রকম দু তিনটে চর, তবে সামনেরটা তো বিশাল এক দ্বীপ। সোহন বললো যে আপনার হাতে কতো সময় আছে, দু ঘন্টা আছে?
আমি বললাম কেন?
তখন সে বললো আপনি আমাদের চর ঘুরতে এসেছেন আর এভাবে ফিরে যাবেন, তাই কি হয়। আমি আপনাকে আমাদের চর ঘুরিয়ে দেব, দেড়টার মধ্যে আপনাকে আমি নৌকা ধরিয়ে দেব।
এরপর ও নদীর দিকে দেখিয়ে বললো ওই পিলারগুলো দেখতে পাচ্ছেন? দেখলাম সত্যিই দূরে নদীর মধ্যে অস্পষ্ট কয়েকটা পিলার দেখা যাচ্ছে। তখন ও বললো ধুবড়ি থেকে ফুলবাড়ি অবধি ব্রিজ তৈরি হচ্ছে ব্রহ্মপুত্রের উপর। পরে জেনেছিলাম এটা ভারতের দীর্ঘতম ব্রিজ হতে চলেছে, লম্বায় ১৯.৩ কিমি তবে শেষ হতে এখনো কয়েক বছর। আমাদের কথাবার্তায় শুধু ব্রহ্মপুত্রের অপার জলরাশি ভাগ হয়ে যাচ্ছিল পানি ও জল এই দুই ধর্মভাষায়।
নৌকা এরমধ্যে এক একটা ঘাটে দাঁড়াতে থাকলো। যাত্রী এবং মালপত্র একে একে নামছে। কপাল খুব ভালো, প্রথম ঘাটেই কুক্কুট ঝাঁকা নেমে গেল, যাক সাময়িক স্বস্তি। ঘাটে দাড়িয়ে রয়েছে ঘোড়ায় টানা গাড়ি মালপত্র বহনের জন্য। এদিকে আমার মধ্যে শুরু হয়েছে এক ধরনের মানসিক দ্বন্দ্ব। সোহনের কথা মতো যেতে তো ইচ্ছা করছেই এক নতুন পৃথিবী দেখতে কিন্তু আবার ভাবছি একদম অপরিচিতের সাথে এভাবে অচেনা জায়গা যাওয়াটা ঠিক হবে? মনস্থির করতে একটু সময় লাগলো, তারপর মনে হলো মানুষকে বিশ্বাস না করলে আর কাকে করবো? সাথে মনে আসছিল আসামের আতিথেয়তার কথা। আর এরকম একটা সুযোগ নষ্ট করতেও মন চাইছিল না। তাই তৎক্ষণাৎ ওকে আমার সম্মতিটা জানিয়ে দিলাম। সে তখন ফোন করে কাকে কি বললো। নৌকা একটি দুটি ঘাট পেরিয়ে চললো, আমরা নামবো শেষ ঘাটে। এখান থেকেই ফেরার নৌকা ছাড়বে। নৌকা ঘাটে লাগলে এক এক করে নামতে থাকলাম।
চরে নেমে শরীরটাকে একটু ছাড়িয়ে নিলাম, একটানা এতক্ষণ নৌকায় বসে থাকার জন্য। সোহনের কথা মতো এগিয়ে গেলাম ওর সাথে, দেখছি সবাই ওর পরিচিত, গ্রামে যে রকম হয়। কিছুদূর গিয়ে এক বাড়ির সামনে দাঁড়ালো। এদিকে আমার মধ্যে একটা ইতস্তত ভাব, কোথায় যাচ্ছি কিছুই জানি না, যার সাথে যাচ্ছি তাকেও চিনি না কিন্তু সেই এখন আমার এই অচেনা অজানা জগতে একমাত্র পরিচিত। এ এক অস্থির মানসিক দোলাচল, ফিরেও যাওয়া যায় না। এরমধ্যে দেখলাম ওর এক বন্ধুই হবে, বাইক বের করে রেখেছে। কিছু কথাবার্তার পর ওর মাকে বললো দিদির বাড়ি চলে যেতে, আমি চড়ে বসলাম বাইকে। বাইক চলতে থাকলে একটু স্বস্তি এলো মনে, একটু হালকা বোধ করলাম। ও একে একে দেখাতে থাকলো ওর পুরোনো স্কুল, মাদ্রাসা, পঞ্চায়েত অফিস। সাথে কথাবার্তাও চলছে, যেন কত দিনের পরিচয় আমাদের। চারিদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। এই দেখুন মানসিক টানাপোড়েনে দ্বীপের নামটাই বলা হয়নি, এর নাম বীরসিং। দ্বীপে প্রচুর ঘোড়া গাড়ি মালপত্র বহনের জন্য, তাই এখানে সেখানে কয়েক শো ঘোড়া চোখে পড়লো। সোহন দেখালো, ওই যে আমাদের হাসপাতাল। আমি আমার রূপকথার কর্মস্থলটা একবার চাক্ষুষ করে নিলাম। শেষে দোকানে খাবার খাইয়ে আমাকে ঘন্টা খানেকের এক অনাবিল আনন্দ দিয়ে নৌকা ঘাটে পৌঁছে দিল। নৌকাও এসে পড়েছে, ১০ মিনিটের মধ্যেই ছাড়বে। এই ঘন্টা খানেকের আলাপে, সে এখন আমার আপনজন হয়ে পড়েছে, কত কথা বলে চলেছি দুজনে। সে আমাকে বলছে রাত্রে থেকে যেতে। বলে, আপনার জন্য তো কিছুই করা হলো না। পরের বার এসে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এলাম। হঠাৎ সে বললো উঠে পড়ুন, এবার নৌকা ছাড়বে। ফিরতে তো হবেই কিন্তু কোথাও একটা টান অনুভব করছিলাম ভিতর থেকে। চেপে বসলাম নৌকায়, ছাড়ার পর যতক্ষণ অবধি দুজন দুজনকে দেখতে পাচ্ছিলাম, দুজনে হাত নেড়ে চলছিলাম। এদিকে শীতের দুপুরের আলোছায়া মেখে ব্রহ্মপুত্র কেমন স্মিতমুখে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে।
কবিতা
সুব্রত মিত্র
কলকাতা
তলিয়েও অম্লান
আমাদের যৌবনের আবরণ মেখে
আমি স্নাতক হতে পারবো না,
প্রেমচাতক সাজবো,
তবু খরার ন্যাড়া মাথায় বৃষ্টির ঢেউ তুলব না।
প্রেম নগরে সবুজের বনে
বউ কথা কও কোকিলের কুহুবাণী
জানি আসবে কানে,
ভ্রমর নিরলস খোঁজে মধুর কলস
কোন কবি উপন্যাস লিখে চলে ধরণীর মায়াবলে।
বসন্তের রজনী, নিদ্রা লেগে তারাদের চোখে
যৌবন দেখেনি তবু, সুন্দরী রমণী
কালো কেশে প্রজাপতির কবিতা লেখে।
কবি কেন হয়েছি তারে ভালবেসেছি
এ যে মৃত্যুর প্রেরণার গান লিখে করেছি স্নান,
ভীরু কাপুরুষ তাই অসাহসে তলাই
রুক্ষ তরু বৃক্ষের পাশে আজও বসে আমি অম্লান
বঙ্গের নিয়তি
আজ দৌলতবাজিতে দোল খায় দুনিয়া
দুনিয়ায় চলছে শুধু ধ্বংসের অবলীলা
অমনোযোগীরা হয় কৃতকার্য
মনোযোগীরা হয় সদা ব্যর্থ,
শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে দেখি এসব কি আয়োজন?
নেই সেথা শিক্ষা সংস্কৃতির পুনরাবৃত্তি
আছে শুধুই বিনোদন
আছে শুধু হাহাকার আছে শুধু আস্ফালন;
শিক্ষাঙ্গনেও নেতার মন্ত্র...!
রাজ্যজুড়ে আছে শুধু নেতা নেত্রীর রঙ্গমঞ্চ
তামাশার ভারে তারা খুঁজছে আরো কিছু সঙ্গ
দৌলতবাজির ধাক্কাতেই যাচ্ছে পিছিয়ে
আমাদের সোনার পশ্চিমবঙ্গ,
দৌলতের কারবারীরা ধাপ্পাবাজির স্কুল খুলেছে
সেই ইস্কুলেই রত্ন সম সম্ভাবেরা জ্বলছে আর পুড়ছে,
নিয়তির ফাঁড়ায় কি দশা-ই যে গিলছে তোমায় আমায়..!
আজ দৌলতবাজিতে দুনিয়াটা দোল খায়
ধাপ্পাবাজির খপ্পরে পড়ে আমরা সবাই অসহায়।
আওল ফাগুন
ফুটিলা পলাশ শাখে পিক কুহু গায়
চল চল যাব সখি শ্যামল বন ছায়।
আসিবে কালিয়া বঁধু সাথে লয়ে ধেনু
তমাল তলেতে বসি বাজাইবে বেনু।
দরশিব পিয়া মুখ হৃদয়ের আশ
জুড়াইব জ্বালা দুই আঁখির পিয়াশ।
পিয়া দরশন বিনা নহে চিত থির
কালিয়া বঁধুর লাগি হৃদয় অধীর।
দাবানল সম দহে যৌবন আগুন
অশোকানন্দন ভনে আওল ফাগুন।
কবিতা
সুকান্ত পাল
জিতপুর, মুর্শিদাবাদ
প্রাণের ভাষা বাংলা ভাষা
বাংলাকে বড় বেসেছি যে ভালো, বাংলাকে ভালোবাসি
আমি একবার নয়, বারবার যেন বাংলায় ফিরে আসি।
বাংলা আমার “গীতাঞ্জলী” “শ্যামলী” “সোনারতরী”
“অগ্নিবীণা”র বাংলা আমার, বাংলায় দ্রোহ করি।
এপার বাংলা ওপার বাংলা, বাংলায় বাঁধা সেতু
দুজনেরে বড় বেসেছি যে ভালো বাংলাই তার হেতু।
বাংলা আমার চিন্তা চেতনা, বাংলায় বাঁধি গান
গর্ব আমার বাঙালি আমি, ভারতের সন্তান।
বাংলা আমার মায়ের ভাষা, তারই জয়গান গাই
বিশ্বের প্রতি ভাষাকে আমার প্রাণের প্রণাম জানাই।
ভজ রে শ্রীগোরা ধন
মিছে বেলা গেল চলে না হল আর গুরু করণ
ভজ রে শ্রীগোরা ধনে ধরে নিতাই চাঁদের চরণ।
এই যে দেহ মহানগর রসে ভরা রসের সাগর
সেথায় রসে দিচ্ছে ভিয়েন মনোময় রূপ মনের নাগর
সেই নাগরের সাধন করো ওরে আমার পাগল মন
ভজ রে শ্রীগোরা ধনে ধরে নিতাই চাঁদের চরণ।
প্রেমময় কামকান্তমনি এই নগরে থাকেন শুনি
চৌদ্দভুবন চন্দ্র সুরজ তারই অধীন এমন গুণী
সুকান্ত কয় সেই নগরে দ্বারী সেজে আছেন মদন
ভজ রে শ্রীগোরা ধনে ধরে নিতাই চাঁদের চরণ।
আকাশ ভেঙে পড়েছে মাথায়
আ...কা...শ
মহিলারা প্রচন্ড লড়াই করছে
বোম নেই, নেই বুলেট বা বেয়নেটতর্কাতীত ঐক্যের ফলে
বিনা পিস্তলে
তোমাদের দেশে
দাউদাউ আগুন
গ্রাস করে নিচ্ছে
স্কার্ফ, হিজাব আর
মেকি মর্যাদা
তেহরানের রাস্তায়
মুখে মুখে আজ অভিশাপ—
'একনায়কের মৃত্যু চাই'।
নির্দয়কে বেড়ে ওঠার
সুযোগ না দিয়ে
লড়াই করে মরাই
বেশি ভালো নয় কি?
কবিতা
প্রজ্ঞা বাজপেয়ী
ভাষান্তর: গৌতম চক্রবর্তী
দয়ার মৃত্যু
মেহসা, শুনতে পাচ্ছ
সারা পশ্চিম আজ
ফেটে পড়েছে প্রতিবাদে
নির্মম অবিচার, ঔদাসীন্য
আর হৃদয়হীনতার বিরুদ্ধে
প্রতিবাদীরা মরছে কিন্তু হারছে না
দেখছি, দেখতে পাচ্ছি
নীতি পুলিশের মারে
তোমার কান দিয়ে রক্ত ঝরছে
উফফ, কী নির্মম
ওদের হাতে, ওখানে
হ্যাঁ, ওখানেই
দয়ার মৃত্যু হয়েছে
সে আঘাত কি আদৌ কম?
তোমার হয়তো ঘুম ভালো হচ্ছে
কিন্তু এখানে চেতনার মৃত্যুতে
ঘুমের দফারফা, যেন
প্রিয় মেহসা,
ওই প্রবল নারীশক্তির
হয়ে প্রার্থনা কর,
প্রার্থনা কর তোমার আত্মা
যাতে সুবিচার পায়।
ওরা যাতে আরও সাহসী হয়ে
প্রাণের জোয়ারে সব
ভাসিয়ে দিতে পারে
সেই কামনা কর,
কামনা কর শেষ পর্যন্ত
যেন এই মনোবল
ওদের অটুট থাকে।
ইরান এখন এক প্রতিরোধের প্রতিমূর্তি।
(হিজাব-বিরোধী প্রতিরোধের জন্য পুলিশ হেফাজতে থাকা মেহসা আমিনির মৃত্যু হয় মাত্র ২২ বছর বয়সে। সেই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সমস্ত ইরান প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে। কবিতাটির লেখিকা ন্যাশনাল ডিফেন্স আকাদেমিতে কর্মরতা একজন কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিক।)
প্রাণ পাখি
মরণ ও মরণ
দেখছি যে কাছ থেকে।
ঘোলাটে চোখে
আবছায়া পরকায়া
যেনো। অঙ্গ হচ্ছে বিকল
যন্ত্রের হাওয়ায় হাঁপর টানার
পালা। অতিথি হয়ে
রাজসরালি, ডাহুকের মতো
উড়ে যাবে সোনাদিঘি আর ঝিনাইদহ ছেড়ে।
কবিতা
ভাস্কর সিন্হা
দুবাই