top of page
robi.jpg
কবিতা
nazrul.jpg

*********************************

ইমন কল্যান

ইউনুস হোসেন

ঈপ্সিতা মন্ডল

*********************************

উত্তরণ বন্ধোপাধ্যায় 

*********************************

ঋতর্ষি দত্ত

*********************************

ঐন্দ্রিলা ব‍্যানার্জী দে

*********************************

কাকলী ঘোষ

*********************************

গুরুপদ চক্রবর্তী

গৌতম ঘোষ

জ্ঞানেন্দ্র প্রসাদ সরকার

*********************************

জহিরুল কায়সার তালুকদার

জামাল ভড় 

*********************************

তাপস কুমার সামন্ত

*********************************

দীপঙ্কর বেরা

দেবাশীষ চ্যাটার্জী

দেবায়ন ভট্টাচার্য্য

দীপান্বিতা ব্যানার্জ্জী

দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়

দিলীপ মজুমদার

*********************************

ধীমান চক্রবর্তী

*********************************

নীলাদ্রী দেব

*********************************

পলাশ দে

পার্থ ঘোষ

প্রত্যুষা ব্যানার্জ্জী চক্রবর্তী

পল্লব হাজরা

প্রজ্ঞা পারমিতা রায়

পীযুষকান্তি দাস

*********************************

বলাশাদমান আক্তার

বুবাই হাজরা

*********************************

ভাস্কর সিন্হা

*********************************

মোঃ মুজিব উল্লাহ

মৌ দাশগুপ্তা

ডঃ মহুয়া দাশগুপ্তা

মিজানুর রহমান মিজান

মোঃ জাহেদুল ইসলাম সমাপ্ত

মঈন মুরসালিন

মহঃ ইসহাক আহমেদ 

মোঃ মুজিব উল্লাহ

*********************************

যতিরেখ্ বিশ্বাস

যশ চক্রবর্তী

*********************************

রূপা মণ্ডল

রাজকুমার পাল

রণেশ চন্দ্র মজুমদার 

রাহুল তরফদার

রীনা নন্দী

*********************************

লালন চন্দ্র মণ্ডল

*********************************

শিখা কর্মকার

শান্তনু সান্যাল

শ্রীয়া দাসগুপ্ত

শাহানার রসিদ ঝর্ণা

শামীম হাসনাইন

শ্রীকান্ত দাস

শক্তিপ্রসাদ ঘোষ

*********************************

সঞ্জয় বিশ্বাস​

সায়নিকা দাস

সৌভনিক চক্রবর্তী

সবুজ

সত্যব্রত আচার্য

সৌভিক দা'

কবিতা

অনুরিমা মণ্ডল দাস

বসন্তপুর, কাকদ্বীপ

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

মতামত
সূচীপত্র
কবিতাঃ অনুরিমা মন্ডল দাস
nazrul.jpg

আর কতদিন

র কতদিন পৃথিবীটা ধিক্কারের যন্ত্রণাতে

শুকনো পলাশের পাপড়ির মত থিতিয়ে থাকবে!

মনের রঙিন আয়নাতে বিধবারা কেন

গাঁথতে পারবে না তাঁদের রঙিন স্বপ্ন!

পাশবিক অত্যাচারের স্বীকার হয়ে

লুটিয়ে পড়বে দেবী দশভুজা নারীশক্তি!

আর কত দিন উপহাসের বাক্যবাণ

দিয়ে জর্জরিত করবে বিপ্লবীদের প্রাণ!

ট্রেন ছেড়ে চলে যাওয়ার পর
শূন্য প্ল্যাটফর্ম জীবন নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে

ভিখারীদের দাবী!

আর কতদিন রজনীগন্ধার 
গন্ধ নিয়ে ছেলেখেলা করবে!

শূণ্য মাঠের এদিক থেকে ওদিক

সরলতার নিস্পাপতা ফিরিয়ে আনতে চিৎকার করবে!

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ অনীক চক্রবর্তী
nazrul.jpg

বিজ্ঞান নাকি বিজ্ঞাপন

 

ক্তিম সূর্যের সদরে

মাথা নত করে সকলে, কিন্তু

আঁধারে ত্রস্ত্র রাধাপদ্ম লড়ে যায়

হার মানায় তীক্ষ রশ্মির বর্শাকে¦

ঠিক তেমনই শুনেছি নাকি,

বিজ্ঞানের সাথে ধর্মের কুটুম্বিতা¦

ধর্ম চায় আকাশ ছুঁতে,

বিজ্ঞানের ধ্বজা ভেঙে,

হয়তো জিতে যাবে..

যুগতো এখন বিজ্ঞানের নয়,

যুগ বিজ্ঞাপনের।

কবিতা

অনিকেত দাস

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ অনিকেত দাস

ধূসর

সাদা কিম্বা কালো
আঁধার নয়ত আলো
এস্‌পার কি ওস্‌পার
এধার অথবা ওধার


আমি কিন্তু ভাই এসবের মাঝে একটু ছোট্ট অবকাশের ফাঁকে সবুজ ঘাসের আগায় ফড়িঙের মতো দুলছি আর দুলছি আর দুলছি।

কবিতা

অনিন্দিতা নাথ

বিজয়গড়, কলকাতা 

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ অনিন্দিতা নাথ

তুই কে আমার

তুই আমার ভাল থাকার পাসওয়ার্ড,
তু
ই আমার অভিমানের সুর,
তুই আমার সব উত্তরগুলোর প্রশ্নের খোঁজ পাওয়া-
তুই হিসাব গুলিয়ে যাওয়া ভাললাগা;
তুই আমার ভালবাসায় ভুল করা-
তুই আমার নিটোল প্রেমের একটুখানি খামতি
তুই আমার অনেক চাওয়ার মানে এইটুকু না পাওয়া 
তুই আমার সত্যিকারের খারাপ লাগা 
তুই আমার ব্যাথা বুকে চেপে রাখা 
তুই আমার কান্না জল ঠোটে মিথ্যে হাসি দিয়ে ঢাকা;
তুই আমার বন্ধু থেকে  একটু কিছু কম-
- কখন আবার অনেকখানি বেশী
তুই আমার ঠিক যেন আমার করেই রাখি। 
তুই আমার?!

কেউ নস তু ই আমার।
তুই আমার মনের ভুল..তুই মিথ্যে..তুই কেবল ফাঁকি। 

তুমি ছিলে তাই


শূন্যে ভরা পরীক্ষার খাতা, 
মার বকা... কাঁদে ছোট্ট বাচ্চার মনটা;
হাসির এক চিলতে রেখা ইঠাৎ খেলা করে যায় ঠোঁটে 
'শচীন'... ঐ যে শচীন রান নিতে ছোটে।

পিঠে ডিগ্রীর বোঝা... মা বাবার গঞ্জনা ভুলে থাকা
বেকারের সান্তনা একটাই 
শচীন ঝড়ে কাঁপছে মরুভূমি
শারজায়ে তার জোড়া সেঞ্চুরী

কেউ আসে এমনই ঝড় হয়ে 
পালটে দিয়ে জীবনের মানে
হঠাৎই চলে যায়
ধূসর রঙে আঁকা হয় জীবনের জলছবি
তবু বিশ্বাস জন্মায় মনের এক কোণায়
জিতবে ভারত... জিতবেই জেনো শচীনের ব্যাটের ছোঁয়ায় 

নির্জন আজ বালুকা বেলায়
স্মৃতিরা শুধু সঙ্গ দেয় আর।
ঐ এক রত্তি ছেলে ভারী ব্যাটের যাদু
ওয়ার্ল্ড কাপে আজও পাকিস্তানকে হারায়।

কত শিশুর কান্নায় 
কত প্রেমের আহুতিতে 
কত শত নির্জলা উপবাসে 
কত মায়ের আকূল প্রার্থনায় 
গাঁথা এক মহীরুহর জীবন কাহিনী 
আমরণ বাজবে কানে ওই শচীন শচীন বাণী, 
ঐ পাঁচ ফুট ছয় ধরবে না আর ব্যাট
শচীন হারা আজ বিশ্ব ক্রিকেট মাঠ
নিস্ফল হার-জিত আজ ক্রিকেট রণে
তুমি ছাড়া 
অপূর্ণই জীবনের মানে। 

কবিতা

আবু আফজাল মোহাঃ সালেহ

জীবন নগর, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ আবু আফজাল সালেহ

কানামাছি

 

মি যেন তোমার বুকে

পাথর হয়ে আছি,

এ জীবন টা যেন আমার সাথে

তোমার চোখাচোখি!

 

বাস্তবতা মানতে যদি তুমি

হতো না তবে ভুল বুঝাবুঝি,

আমি তো নিজের ভুলে

ঠাঁই পেয়েছি আস্তাকূঁড়ে,

খেলছি কানামাছি!

আমরা বাংলাদেশি বাঙ্গালী

 

হেফাজত আন্দোলনের পর,

আমি মনে করেছিলাম

কালো মেঘ হবে,

তারপর প্রলয়

অবশেষে হ’বে মহাপ্রলয়!

 

রানা প্লাজা ধসের পর,

আমি ভেবেছিলাম

সঞ্চয়িত ক্ষোভ জন্ম নেবে দ্রোহে,

অতঃপর আন্দোলন, পরে বিপ্লব হবে,

ধসে পড়বে হোমরা চোমরা সব মালিক

পাহাড় ধসের মতো!

 

তুমি আর আমি

তুমি থাকো আলিশান বাড়ীতে, 
আর বুলেটপ্রুফ কালো গাড়ীতে। 
মগ্ন তুমি সাউন্ড সিস্টেমে। 
রেইন সার্কুলেশন শুনতে তুমি পাওনা! 

ডেকোরেটেড বাসায় চ্যানেল দেখছো, 
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিতে আন্দোলিত ফরেস্ট, পশুপাখি 
আর স্টার-তারায় ড্যান্স, চোখ জুড়ানো সব দৃশ্য! 
কার, ম্যানশন আর আর্টিফিসিয়ালে ভুলে গেছো ন্যাচারালকে। 

আমার কৃষকেরা শোনে জারি, মাঝিরা গায় ভাটিয়ালী, 
শ্রমিকেরা গায় সারি। 
শোনে শ্রাবণের অফুরাণ বৃষ্টির ধারাপাত। 
কী অপূর্ব! 
দেখে চড়ুই, শালিক আর শোনে ঘুঘুর ডাক। 

আমি শিখি রাখালের কাছে, কৃষকের থেকে। 
দেখি দুরন্ত কিশোর-কিশোরী’র জলক্রীড়া। 
শিখি পথ-শিশু থেকে। 

গনজাগরণ মঞ্চের পর,

আমি আশা করেছিলাম

বাংলাদেশ হবে রাজাকারমুক্ত,

ভেসে যাবে সব দুর্নীতি, কূকীর্তি!

 

আমি হয়তো ভুলে গেছি

এটা বাংলাদেশ, আমরা বাঙ্গালী,

আমরা দু’ভাগে বিভক্ত!

বৃষ্টির ছড়া
 

ঝিরঝিরিয়ে বৃষ্টি নামে
দস্যি ছেলে লাফিয়ে ওঠে,
বৃষ্টি হবে বৃষ্টি মেখে
বৃষ্টি সুরে বাইবে নাও,
নৌকা চলবে পাল তুলে
বৃষ্টি ঝড়ে দুলছে ঢেউ ;
দস্যি ছেলে হাঁপিয়ে ওঠে,
নৌকা চালিয়ে উলটা বাও।

কালো মেঘ

হৈহৈ হৈহৈ
বৃষ্টি বুঝি  এই এলো,
রাগ করেছে মেঘলা আকাশ
মুখখানা একটু কালো।

বৃদ্ধ নাপিত নড়ে বসে
কখন বয় দমকা বাতাস,
শঙ্কায় তার মন উতলা
ভাঙে কখন স্বপ্ন আবাস!

একটি নাম
 

কটি নাম সাহস যেন
একটি নাম অভয় দিল
একটি নাম মন্ত্র যেন
আড়মোড়া  ভেঙে জেগে ওঠা
যুদ্ধে যাবার।
একটি নাম আশার প্রদীপ
একটি নাম ভরসার প্রতীক
একটি নাম জ্বলজ্বলে
অস্ত্র নিয়ে একজোটে
ঝাঁপিয়ে পড়ার।

একটি নাম লাল-সবুজের
একটি নাম ইলিশ-দোয়েল
একটি নাম রেসকোর্স
ছিনিয়ে নিয়ে দানব থেকে
সঠিক পথে বহমান।
একটি নাম ঢাকা-খুলনা
একটি নাম পদ্মা-মেঘনা
একটি নাম প্রাণে প্রাণে
মিলেমিশে একাকার
মুজিবুর রহমান।

শৈশব মানে

 

শৈশব মানে স্বাধীনতা

আনন্দ এবং আশা

 

শৈশব মানে হার না মানা

অন্যায়ের বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য,

নৈ্তিকতায় হিমায়িত রক্ত!

 

শৈশব মানে যুদ্ধক্ষেত্র,

কঠিন জীবনের আগে সহজ জীবন-

খাপ খাওয়াতে শেখা।

 

শৈশব মানে সবুজ বাগান,

অতৃপ্ত বাসনা আর অবাস্তব কল্পনা।

 

শৈশব মানে ব্যস্ততা,

ক্লাশওয়ার্ক আর হোমওয়ার্কে ভরা,

মধ্যে প্রেমে হাবুডুবু!

 

শৈশব মানে হলিডে,

সময় কাটে না আলস্যেও,

পিতামাতার সাথে ঘুরাঘুরি।

 

আমার শৈশব ?

-শুধুই স্বৃতি !

ঈদের দিনে খুশির দিনে

দের দিনে খুশির দিনে
সকাল বিকাল ফুর্তি
পাঞ্জাবি আর নতুন জামায়
আতর-টুপি-কুর্তি।
মিষ্টিমুখে সবাই মিলে
করব কোলাকুলি
বিভেদ বড়াই ভুলে গিয়ে
পরাণ খোলাখুলি।
গরুর গোস্ত মুরগি-খাসি
আছে ঘ্রাণের পোলাও
খেয়েদেয়ে দিই বিলিয়ে
হাতে হাতে মিলাও।
বন্ধু-স্বজন পাড়ার লোকে
মিলব ভেবে বুকে
ছোটবড় নেইতো তফাৎ
দুখ কিবা সুখে।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ আশরাফুল কবীর

এফিটাফ

মনি এক হেমন্তে পরিত্যাক্ত হয়েছিলাম।

অত:পর ঠিক সেখানটাতেই আছি, ঠিক
যেন এক প্রতীক্ষারত প্রমিথিউসের মতো
ক্লান্ত, নীরব, নিস্তব্ধ সন্ধা হতে উদয়ান্ত
অখন্ড অবসর, কতো যে দিন হয় গতো!

ইয়াত্তা নেই তার, কাল চক্রের পারাপার
কত রাত যে হয় ভোর এক নিমীলতায়,
অবসন্নতায়,ক্লান্ত প্রতীক্ষায়। প্রয়োজন
নেই দু গন্ডা হিসাব মেলানোর জটিলতায়।

 

একালের অথবা সেকালের, কোন কালের?
এক পৌরানিক প্রশ্ন হয়ে থাক
যদি হও শঙ্খচিল, এসো কালেভদ্রে কখনো 
হারিয়ে অচেনা পথের বাক।

আমি আছি সেই একই রকম ঠিক হেমন্তের পর
সম্মুখে চির হিম বসন্ত কাটছেনা শীতের তর। 

মিলবেনা হয়তো সব সমীকরন ধাপ থেকে ধাপ
শূন্য বরাবরই শূন্য, নির্জন, পরিত্যাক্ততায় রবে 
আমার এফিটাফ।

দুই কালের প্রণয়

বাতিটা আচমকা জ্বলে ওঠে,
আলোতে ভেসে যায় ল্যাম্পপোষ্টের চারপাশ
আঁধারের নিস্পন্দতায় এতটা কাল ঢেকে ছিল যে কালো গহব্বর
আজ  সে পেয়েছে দারুন গতি! মুহূর্তেই পেয়েছে ভাষা
তাইতো সময়ে অসময়ে ঘুরে ফিরে কাছে আসা।
জড়িয়ে দাড়াই
তবু যেন কিছুটা কৌণিক দূরত্ব রয়ে যায়
দ্বিধান্বিত হয় আসলে দুই কালের প্রণয়
চকিতেই বুঝতে পারি
শূণ্যতা পূরণ হয়নি
সে তো পূরণ হবার নয়।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ আশিস চক্রবর্তী

কবিতা

আশিস চক্রবর্তী

নন্দননগর, বেলঘরিয়ে

এ কেমন আমি!

 

যা ক্কলা আজ ভাল করে নাইতে ভুলে গেছি!

কালকে রাতের কলঙ্ক পাঁক,

গভীর নেশার ভীষণ দেমাক,

আসক্তির ছোপ ছোপ দাগ,

আজ সকালে ঘষে ঘষে তুলতে ভুলে গেছি,

যা ক্কলা আজ ভাল করে নাইতে ভুলে গেছি!

 

দেওয়াল ভরা মুখোশগুলো খোশমেজাজই বড় –

হাব-ভাব সব আলগ আলগ,

লাগ ভেল্কি লাগ লাগ লাগ

আমির সাথে আমির ফারাক

রূপ বদলেই বাজার গরম, নয়তো জড়সড়

শতেক রকম রূপের মুখোস খোশমেজাজী বড়।

 

বিবেক বেবাক ব্রেক কষেছে নড়ন চড়ন- নট

পুণ্যগুলোর দৈন্য দশা,

আমার পেশা, ‘আমির নেশা’

লক্ষ্মী যখন ঘটে ঠাসা,

কি আসে যায় আমার নাচন শালীন বা উদ্ভট!

তাই-বিবেক বেবাক ব্রেক কষেছে নড়ন চড়ন- নট

ফোলাতে চাও ফোলাও তুমি গালকে হাতে রেখে-

মন বুঝেছি চক্ষু বুজে

গরল পথে সরল খুঁজে

ভুল করিনি নিজে।

বাজি রেখে ভুল করেছি ভুলকে ভুলতে দেখে

ভেবে ভেবে ফোলাও তুমি গালকে হাতে রেখে।

 

তবুও তোমার ফালতু সময় একটু যদি থাকে-

নিভে যাওয়ার ইতিহাসে

বয়ে যাওয়ার এই প্রয়াসে,

জ্বলতে থাকা স্বর্গবাসে

দীর্ঘশ্বাসের অশ্রু ফোঁটা খানিক দিও এঁকে

যদি তোমার হাতে একটু ফালতু সময় থাকে।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ ইমন কল্যান

কবিতা

ইমন কল্যাণ

বৈশাখী নার্গিস 

খানে সবাই বদলে যায়। এমনকি যে ভালবাসে সেও। ক্রশিং এ হাজার খোয়াইশ পথ আটকে।

কে কবে এল গেল ওসবে কিছু যায় আসে না।

মঁশিয়ে আমার একটা আর্জি ছিল।

যখন তুমি একলা হয়ে বন্ধু খোঁজো, কি ভেবে হাতড়াও। হাইওয়ে ধরে একটা মধ্যরাত গড়াতে শুরু করার পর। ধ্বংসস্তুপের ম্যানিকুইনে পর্দা টাঙানো থাকে।

যদিও দুফোটা চোখের জল গড়িয়ে পড়ে নদীতে।

অসংখ্য ব্রিগেড পেড়িয়ে প্রেম আর প্রেম থাকে না। মঁশিয়ে ভালোবাসতে গেলে একটা জীবন কম পড়ে যাবে। নাহলে তো চলতি কা নাম ন দো গ্যায়ারা।

বিশ্বাস আপাতত ক্লোব মিক্সে।**

হাইওয়ে

ঘুম না এলে নীলচে চোয়াল বেয়ে বীরত্ব নেমে আসে। আপনি সুর না বেসুর না অসুর তা বুঝতে কয়েক মাইক্রন শব্দই যথেষ্ট।

একটা বেঞ্জ মার্সিডিজ,

একটা ল্যান্ড রোভার তালিকায় থাকলেও গঙ্গার মেঘলা আকাশ জানে,

আসলে বেঁচে থাকার জন্যে কোনটা বেশি দামী।

মুচকি হেসে এটুকু বলতেই পারি..

হেই নিগর..জাস্ট গ্রো আপ।

পৃথিবী এখনো জেগে।**

ম্যানিকুইন জীবন

য়ত একটা জীবন কম।

তার পরও অনেক কিছু।

বলি কি একটু ডুব মেরে দিই এক বালতি জলে।

তাও বুঝি হবে না।

কারণ ঠাণ্ডাও কম নয়।

তা বলে যে সুইজারল্যান্ড এ বসে আছি তাও নয়।

গতকাল কিম্বা আজ।

আমার কিছু মনে নেই।

একটা সমুদ্রের ভেতর কতটা জল আছে সেটাও একটা কথা।

আমার গানগুলো পকেটে।

আমার সুর গুলো বালিশে চাপা।

কান্নাগুলো আপাতত জানালায়।

তারপর কে আর খোঁজ রাখে।

আসলেই বিরক্তি কিম্বা নাটক কিম্বা মিথ্যে।

এক সূত্রে বাঁধা।

আমি ডানা মেলে দিই।

আমি ফ্যানের দিকে চেয়ে মৃত্যু ভাবি।

সময় ভাবি।

আমার অনেক কিছুর জানার আছে।

অনেক কিছু বলার আছে।

কিন্তু আগামীকাল কোথায় যেন একটা কেটে যাওয়া বৃষ্টির কবিতা নেমে আসলেও আসতে পারে।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ ইউনুস হোসেন

কবিতা

ইউনুস হোসেন

রাত জাগা ধূসর তারা
 

রাতের অন্ধকার,যখন;
নিজের বসতি স্থাপন করছিল।
দূর্বা আগায় সদ্য দু-এক ফোটা;
                        হিমেল আবেশ।

এত কোটি নক্ষত্রের ভিড়ে,
দূর কোন এক দেশের তারা ধূসর ভাবে
চেয়ে আছে; যে পালকি,পথ চলেছে
                                   অন্ধকার খুঁড়ে।
নববধূ;
অনাকাঙ্খিত স্পর্শ বিশীর্ণ বিবর্ণ হয়ে,
                       চারিদিক ভর করেছে।

হঠাৎ এক লক্ষ্মীপেঁচা ডেকে উঠলো,
একটা রুদ্ধ বিষাদ;অনিচ্ছা-পরিণয়।
পাল্কি বাহকদের দাম্ভিক পা গুলো
মেঠোপথে এঁকে চলেছে;
                   বিচ্ছেদের আলপনা।
অঘ্রানের রাতে চোখ ভেজে,
                নীল সমুদ্র জলে।
নিম বনে ঢাকা পড়ে দিগন্ত আকাশ,
ধূসরতা ঝরে; মেদুর হয় ওপাড়।

রাত জাগে তারাটি ধূসর চোখে,
প্রতিচ্ছবি মিশরের নীলনদে।

রাত জাগে তারাটি মহুয়ার বনে;
নীল কালো নক্ষত্রের দেশে।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ ঈপ্সিতা মন্ডল

কবিতা

ঈপ্সিতা মন্ডল

স্বপ্ন ছিল

স্বপ্ন ছিল বুকের মাঝে
যত্ন করে গাঁথা;
স্বপ্ন যে হায় পাখির মত
যায় কি তারে বাঁধা?
ভেবেছিলেম সোনার খাঁচায়
শিকল দিয়ে ধরে
রাখব তারে সারাজীবন
কেবল নিজের করে!
মুক্ত পাখি গায়ের জোরে
বন্দী করা যেই
বদ্ধ হলেম নিজেই যেন
সেই কারাগারেই;
“লালন করা স্বপ্ন তুমি
বাঁধন হয়ে শেষে 
এলে আমার জীবন জুড়ে
দুঃস্বপ্নের বেশে?
কেন তবে এমন করে

চেয়েছিলেম তোমায়?
দুলিয়েছিলে হৃদয় কেন
এমনি দুরাশায়?”।


উড়িয়ে দিলেম বন্দী পাখি
মুক্তি পাওয়ার আশায়,
কঠিন কঠোর বাস্তবেতেই 
যুঝতে হবে আমায়;
থাক না পাখি বনের মাঝে 
থাক না অমনি ছাড়া -
জানলা দিয়ে দেখব তারে 
নাই বা দিল ধরা?
ভালবেসে নিজেই যদি
আসে আমার তরে,
বরণ করে নেব তখন
নেব আপন করে।   

কবিতাঃ উত্তরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতা

উত্তরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

উত্তর

মাঝরাতের হ্যালোজেন উৎসবের ভীড়ে 
ধীর পায়ে ভেসে যাচ্ছে কেউ
আঁধারের খোঁজে, আরো একবার। 

কোন দোষ করেনি সেঃ এমন কিছু, 
গুণীও নয়। ভালবাসা দোষ না গুণ?
ভগবান জানেন বলেন না কাউকে। 
সে শুধু জানে জন্মদিনের মোম 
নিভে গেছে শেষ বারের মত, 

এঁটো কেক খাওয়াও সারা। 
আর তাকে  না যারা, তারা 
মাথা উঁচু করে ফিরে গেছে যে যার মত। 
বুকে জমে ওঠা আবর্জনার স্তূপে 
হারিয়ে গেছে যত চেনা মুখ,
নিভে যাওয়া মোমের ধোঁয়ায় চারিদিক ঝাপসা 
বন্ধু-হ্যালোজেন নিভে আসছে;
ভালবাসা দোষ না গুণ?
ভগবান জানেন, আর জানাতে চলেছে সে। 

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতা - ঋতর্ষি দত্ত

কবিতা

ঋতর্ষি দত্ত

জীবন্মৃত

 

কাব্য হরণ,

ঝর্ণা কলম শুকিয়ে গেছে, খেরোর খাতা-

শূন্য দোয়াত, হয়নি লেখা জীবন কথা।

 

ছন্দ পতন,

স্বভাব কবি শব্দ খোঁজে, ব্যর্থ প্রেমে

ধুঁকছে জীবন, গল্প থেমে।

 

মৃত্যু বরণ,

পরম গুরুর অভাব বোধে-

কবি এখন জীবন্মৃত,

ছন্দে ছড়ায় মনের কথা হয় না বলা আর।

ভালোবাসা

 

নের নিবেদন নয়, শরীরের আবেদনে

হৃদয় দেয় সাড়া-

সঙ্গ নয়, অনুষঙ্গ খুঁজে ফেরে

বিরহের নায়ক, মেতে ওঠে মরীচিকার ঝলকানিতে!

বিষাদের তীব্র নেশা বাধ্য করে

অন্তসারশূণ্যতাকে সফরসঙ্গী করতে;

কবিতার ছন্দে, ভাষার কারচুপিতে

বাসনা থাকে সুপ্ত-

অমরত্বের লোভ, মহত্বের হাতছানি আর

প্রেমের বিলাসিতায় ভালোবাসা প্রায় লুপ্ত!

মাকড়সা

 

মিথ্যে বুনে মিথ্যে বুনে

বানাব এক স্বপ্ন জগৎ;

সহজ ভাবে মিশবে মানুষ

নীল আকাশে উড়বে ফানুস-

দিনের আলো মিলিয়ে গেলে

জ্বালিয়ে নেব রুপোলি আলো,

উচ্ছ্বাসে আর উল্লাসে সব

হারিয়ে যাবে মনের কালো।

 

হঠাৎ দেখি গিয়েছে সব

‘ব্যাধ’ বলে তুলছে রব

আসলে সবই মনের ভুল

সুতো নয় তো; শুধুই ঝুল

হঠাৎ এসে ধরবে টুঁটি

বলা হবে না, হতে চেয়েছিলাম রেশম গুটি।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ ঐন্দ্রিলা ব‍্যানার্জী দে

কবিতা

ঐন্দ্রিলা ব‍্যানার্জী দে

বেলেঘাটা, কলকাতা 

রিক্ত

 

বার কিছু ভাবনা এলোমেলো অগোছালো

​ইচ্ছেরোদ ফুরিয়ে আসে

শ্রান্ত বিকেল নামে

সমুদ্র সৈকতে আমি একা তুমিহীন

জানি তোমার হাত ধরে, 

সমুদ্র দেখা আমার হবেনা,

তোমার চোখেই সমুদ্র দেখি

সে চোখের জল বড় নোনতা

বালি ভর্তি মুঠো একটু একটু করে আলগা হচ্ছে....

আবার আমি সমুদ্র সৈকতে

সমুদ্র এখন তুমিহীন

আমি এখন তুমি।।

সুখের অসুখ

সুখের ঘরে সীঁধ কেটেছে অসুখ,

ধুলোমাখা নরম দুটো হাত দিন পেরিয়ে রাতের কড়ানাড়া

অলস কিন্তু অবাধ যাতায়াত।।

ইঁট কাঠেতে ঘূণ ধরেছে বেশ

চিলেকোঠায় অতীত স্তুপাকার দেওয়াল জুড়ে মনপাহাড়ের দেশ নাছোড়বান্দা স্মৃতি একাকার।

হলদে খামে ধূসর আঁকিবুকি

ছাদের ঘরে হাত ছোঁয়ানো সুখ

সিঁড়ির বাঁকে এলোমেলো রাত

সিলিং জুড়ে ছায়ারা উন্মুখ।

নেশার বিষে উলোটপুরান ক্ষণ

ভেজা চোখে মিশকালো সেই রাত

অবাধ্য মন আলগোছেতে খোঁজে

আগলানো সুখ আসবে অকস্মাৎ ।।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ কাকলী ঘোষ

কবিতা

কাকলী ঘো

আমার শহরে

মার শহর দিয়ে বয়ে চলা নামহীন নদী ,
ওর বুকের উপর কংক্রিটের ব্রিজটা পার হয়ে 
এপারে এসো তুমি l
তুমি কী বহু দূর দেশে থাক বন্ধু -?
তবে মেঘের বাড়ি ছুঁয়ে
উড়ে এসো তুমি আমার শহর কোলে ,
ছুঁয়ে যাও আজ নরম সকালের নদীজলে বিভা l
উড়ে এসো বন্ধু আমার কল্লোলিনী শহরের নীল গড়ানে ঢেউ নদী বুকে ,
ছুঁয়ে যাও আমার শহরের অজানা নদীর নামহীন বন্দর l 
কুয়াশা নিমগ্নতায় শায়িত এখন 

 

সমাসীন ঘুম ভেঙে ও যে অজানিত মুখ মায়ায় চায় 
আজকের সূর্যোদয় l 
নিরাশ কোর না ওকে ,
এরপর তো সেই পুরাতন নিয়মকানুন ,
ছপছপ জলে জাহাজের ডেক -লঞ্চ হল্লা -চিমনির আকাশ ছোঁয়া 
চুলে ঢাকা মেঘের বাড়ি l 
তখন আর উড়তে পারবে না বন্ধু মেঘবাড়ি ছুঁয়ে l 
তাই বড় কাতর অনুরোধ -আকুতি আমার বন্ধু ,
উড়ে এসো মেঘবাড়ি ছুঁয়ে এইক্ষণে 
আমার শহরে l

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ গুরুপদ চক্রবর্তী 

কবিতা

গুরুপদ চক্রবর্তী 

দূর্বুদ্ধ 
 

জীবন প্রভাতে আশ্চর্য চোখে দেখা পৃথিবীকে 
প্রশ্ন করেছিলাম 
কী তোমার পরিচয়? 
জাদুকরের দূর্বুদ্ধ হাসি হেসে 
দিয়েছিলে উত্তর 
চিনবে না আমায়। 

এরপর আরো কত বর্ষ হয়ে পার 
কিশোর আমার মন 
করল জিজ্ঞাসা তারে 
কি তোমার পরিচয়য়?
পৃথিবীটা হাসল নিরুত্তর। বড় হলাম আর 
অর্থনীতি, সমাজনীতি 
কামসূত্রও, মনস্তত্ত্ব
কেমিস্ট্রি, ফিজিক্স - 
সাইন্টিফিক চিন্তাধারা –
বিশ্বাসে ভরপুর। 

ফের জিজ্ঞাসা করি, - 
জগতের পরিচয় -
তবু এক পৃথিবী
দিল না উত্তর

এরপর অনেক বছর হল পার 
লঙ্গাই, কুশিয়ারা 
জলের ধারা 
অনেক গিয়েছে চলে 
স্ত্রী-পুত্র সংসার,
ব্যবসা ও রাজনীতি
সাফল্য আমার হাতে আজ।
জীবন সায়াহ্নে 
হাজার অভিজ্ঞতায় অভিজ্ঞ আমি 
করেছি আবার জিজ্ঞাসা তারে-
কি তোমার পরিচয়, দেবে না জানতে?
আবার দূর্বুদ্ধ হাসি হেসে 
দিল সে উত্তর 
আমায় চেনে নি কেউ, চিনবে না তুমি।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

জ্ঞানেন্দ্র প্রসাদ সরকার

কবিতা

জ্ঞানেন্দ্র প্রসাদ সরকার

কলকাতা

একটি মেয়ে

 

ট্রেনে উঠেই দরজার ঠিক বাঁপাশে -

একটি মেয়ে, কোলে একটা ছোট্ট বাচ্চা।

আমি দাঁড়িয়ে অন্যপাশে –

ভিড় কম ।

শিশুটির বয়স হয়তো সাতমাস কি একটু বেশি।

একটা ময়লা সবুজ জামা, উলঙ্গ –

কোমরে একাধিক মাদুলি, তাবিজ।

মেয়েটির পরনেও একটা ময়লা শাড়ি, বসে।

নাবালিকা অনুমানে আশ্চর্য হব না।

আমাদের মত ভদ্রজাতি নয়!

শিশুটি লাফালাফি করছে, হয়তো খিদেয়

দেখি মেয়েটি স্তন্যপান করায় –

স্তম্ভিত –

নিশ্চয় ইচ্ছামাতৃত্ব নয়,

তবুও তো এখন সন্তান শুধুই তার।

হাজার দুঃখ কষ্ট,

সমাজের সাথে লড়াই –

শিশুটিকে মানুষ করার দায়িত্ব -

শুধুই তার।

তার জন্য কোনো আন্না হাজারে নেই,

কোনো আলোচনা হবে না বিধানসভায়।

তবুও এই মেয়েটি কবিতার বিষয়,

ক্যামেরায় অথবা রং তুলির ছবি।

এগজিবিসনে পুরস্কার,

আবার হয়তো মোটা দাম।

তৈরি হবে সিনেমা – অস্কার নিশ্চিত।

তবুও এই মেয়েটিকে আবার দেখব –

একই ভাবে –

অন্য কোনদিন, অন্য কোনখানে।

কিছুপরে নেমে যায় মেয়েটি,

আমি আর একটু পর।

আবার ব্যস্ততা –

নিজের কাছে কিছু প্রশ্নের উত্তর বাকীই রয়ে গেল,

পাই নি।

ইচ্ছে

রবি হব, কবি হব,
ইচ্ছে করে এটা হব, ইচ্ছে করে ওটাও হব।
পথের ধারে পথিক হব, এক্কাগাড়ির চালক,
ছোট্ট মনে ভাবছে এসব, ছোট্ট একটি বালক।
উড়োজাহাজ সঙ্গে নিয়ে, দূর দেশে ভাই পারি দেব -
আবার ভাবি ফেরিওয়ালা, এ গ্রাম ছেড়ে ও গ্রাম যাব।
নদীর বুকে মাঝি, আবার মাছ ধরব জেলে,
ইস্কুলেতে মাস্টারমশাই, পড়বে কত ছেলে।
মিষ্টি দেখে ময়রা হব, মুদী হতেও নেইকো দোষ,
গোঠের রাখাল মিষ্টি ভারি, গয়লা নন্দ ঘোষ।
আদালতে উকিল হব, রোগীর কবিরাজ,
রাজমিস্ত্রি দালান গড়ে, ওটাই হব আজ।
আচ্ছা, যদি হতাম পাখি! বাঁধন ছাড়া মন,
মনের সুখে নীল আকাশে অবাধ বিচরণ।।

কবিতাঃ গৌতম ঘোষ

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতা

গৌতম ঘোষ, মুম্বাই

খাঁচার পাখি


খাঁচার সবুজ তোতা,
রাঙা ঠোঁটে বলছে কত কথা,
চোখ পাকিয়ে দেখছে এদিক ওদিক,
সময় ধ’রে চলছে সবই ঠিক।
খাঁচার ভিতর ছোট্ট জীবন,
মানুষ হল কেমন!
তবু, সে কেন করছে কোলাহল?
বাইরে বসে বলছে কথা মুক্তো তোতার দল।
খাঁচার তোতা বোঝে না তাদের ভাষা,
ভাবছে ওরা আজব, কতই সর্বনাশা!
দুপুরবেলা কাছের মানুষ নেইকো আশেপাশে,
খাঁচার তোতার মনও তাই দূর গগণে ভাসে।
সেথায় উড়ছে পাখি দিকে দিকে,
তারা হারায় কোথায় এক পলকে
নেই তা জানা তার।
খাঁচার জীবন, এটাই বেশ মজার।

 

প্রশ্ন
 

ছোট্ট খুকু প্রশ্ন করে মাকে,
আমি এলাম কোথা থেকে?
আদর করে বলেন মাতা,
তোরে দ্যাছেন বিধাতা।
অবাক হয়ে খুকু শুধায়,
বিধাতা কে? কোথায় থাকেন?
উর্দ্ধপানে দেখিয়ে মাতা বলেন,
তিনি ভগবান, থাকেন হোথায়।
কেমন করে এলাম আমি নীচে?
তিনিই এসে দ্যাছেন মোর কাছে।
খুকু শুধায়, কভু দেখি না কেন তারে?
মাতা বলেন, দেখবি কেমন করে?
খুকু শুধায়, কেন? কিসের অসুবিধা?
মাতা বলেন, যায় না যারে দেখা 
তিনি ভগবান, সবার বিধাতা।
অবাক খুকু ভাবে, এ কেমন কথা!
    

সেই খুকু আজ নিজেই মাতা,

নতুন এক শিশুর জন্মদাতা।

তবু প্রশ্নগুলো আজও ভাবায় তারে,

যখন নতুন শিশু একই প্রশ্ন করে।

মনের ধাঁধাঁয় জাল বুনে যায় ক্রমে,

নীল গগনের অসীম শূন্যে ভ্রমে,

বলাকা-দের পাখনাগুলির

দোলায়মনের জালে জড়ায় বিস্ময়।

পুকুর ঘাটে
 

সাঁঝেরবেলা পুকুর ঘাটে 
একলা কায়া
জ্যোৎস্নালোকে সলিল পটে 
তারই ছায়া,
আলিঙ্গনে উষ্ণ অলীক হৃদয়
দুলছে জলের মৃদু দোলায়।
আলো আঁধারীর ইন্দ্রজালে
গোপন কথার যাদু খেলে!
অশ্রু শুকায় কপোলতলে,
দীর্ঘশ্বাসে বাতাস দোলে।
হে রমণী, জীবন-রণে
পরাজয়ের অভিমানে,
হারিয়ে গেলে অনির্দেশে
এই পুকুর ঘাটে এসে?
প্রশ্ন করে ঘাটের জল,
ছলাৎছল! ছলাৎছল!

শীতবুড়ি

য়স তার পেরিয়েছে পঁচাত্তর,

কেশরাশি অতি বিরল ও ধূসর,

হাঁটু আর মাথা এক করি কাঁপিতেছে একাকিনী বুড়ি।

পাতা ঝরা শীতের সকালে-রোদ চুরি গেছে কুয়াশার আড়ালে,

তাপ তাই লাগেনা পৃথিবীতে;

শীত বাড়ে উত্তুরে হাওয়াতে।

দৃষ্টি তার ভাসাভাসা,

মনে একরাশ জিজ্ঞাসা,

মেলেনি অনেক উত্তর,

বরফজমা পর্বত-শিখর।

দিবস গড়িয়ে যায় দ্বিপ্রহরে,

স্মৃতির ঝরা পাতা জুড়ে;

সে এক অবোধ্য কোলাজ,

পড়ন্ত রোদে ক্ষীয়মাণ লাজ!

দিন চলে যায় গোধূলিবেলায়,

মনের হিজিবিজি জালে জড়ায়ে বুড়ি

হেঁটে চলে গুটি গুটি পায়ে,

এক, দুই, তিন...শ্বাস গুনে গুনে,আলো-আঁধারির মাঝখানে।   

এসেছে শরৎ

প্রবল বরষা থেমে,

শরৎ এসেছে নেমে

মেঘের ভেলায় চড়ে

নীলাকাশ জুড়ে।

সোনালি রোদের বেশে

বলাকার ডানায় মিশে,

বাতাসে লাগিয়ে দোলা

কমল পল্লবে করিছে খেলা।

সরোবর পুজোর গন্ধ ছড়ায়,

ভ্রমরও তারই গান গায়,

উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে

শারদ চিত্রপট জুড়ে।

শিউলিরা সৌরভে

দোলা দেয় অনুভবে,

সাঁঝের আঁধার মেলে

শিশির ঝরে নূপুরের তালে।

গভীর রাতের নীরবতায়

ঝিঁঝিঁদের মূর্ছনায়,

শশী ভাসে স্বপ্ন মায়ায়

তারাদের বিছানো দোলায়।
 

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ জহিরুল কায়সার তালুকদার

কবিতা

জহিরুল কায়সার তালুকদার 

বাংলাবাজার, ঢাকা, বাংলাদেশ

মানবতার জাগরণ

[নির্যাতিত ও নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের উৎসর্গে]

 

র্ণবাদে মত্ত ওরা... ধ্বংস হানে সভ্যতায়,

সর্বনাশে লিপ্ত হয়ে অশ্রু ধরে সু’চি-তায়।

নারীকুলে যজ্ঞ করে বক্ষছেঁড়া যৌনতায়,

চুপিসারে সঙ্গ বাঁধে, কেউ বা থাকে মৌনতায়।

 

প্রাণে প্রাণে রক্ত ঝড়ে, ভিটে জ্বলে দাবানল,

রমণীতে তৃপ্ত করে কামে ভরা প্রাণবল।

প্রতিবাদে ফাটে কেউ, কারো চোখে নাকের জল,

কাঁটাতারে অঙ্গ ছিঁড়ে পালিয়ে বাঁচে শত দল।

 

বঙ্গমা’তে তৃষ্ণা মেলে হারিয়ে তবু সর্বধন,

দেয়া-নেয়ার অংক কষে সার্বজনীন বিশ্বজন।

স্বল্প ত্রাণে কাড়াকাড়ি, কোলে কাঁদে শিশুমন,

যুদ্ধ জয়ে ক্ষান্ত কর, শান্ত কর বার্মাবন।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ ​জামাল ভড়

কবিতা

- জামাল ভড়

প্রকৃতির ধর্ম


কদিন ইস্কুলে গিয়ে দেখে অর্ক
দুইদলে বেধে গেছে বড় জোর তর্ক ;
তর্কের কেন্দ্রে ছিল শীত গ্রীষ্ম
তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ভয়ানক দৃশ্য ।
                                
গ্রীষ্মের বিরুদ্ধে ছিল এই যুক্তি
হাঁস ফাঁস করা থেকে নেই কোন মুক্তি;
খাদ্যেও সুখ নেই খেয়ে নেই স্বস্তি
খেয়ে-পরে-বসে-শুয়ে শীতে সুখ ‘অস্তি'।
                                    
হাড়-কাঁপা ঠাণ্ডায় ভোরে ওঠা শক্ত
বাইরে গেলেই যেন জমে যায় রক্ত;
হাত পায়ে টান ধরে খসখসে গাত্র
টের পাবে হাড়ে হাড়ে জলে নামা মাত্র।
                                    

কাঁঠালের দেশে পাবে আম জাম বিল্ব

রসে ভরা ফলগুলি গরমেতেই মিললো;

সরবতে স্বাদ পাবে,

সুখ দেবে লস্যি রসনা তৃপ্ত হবে হও যত দস্যি!   

                          

শীতকালে পাবে তুমি যত শাক সবজি

পেট ভরে খেতে পার ডুবিয়ে ঐ কব্জি

খেজুরের রস পাবে নলেনের সন্দেশ

পার্বণী পিঠা পাবে খেতে পার কমবেশ।                     

 

সবদিক শুনে বুঝে হেঁকে বলে অর্ক

খুব হলো থাম দেখি থামাও বিতর্ক;

শীতকালে শীত ভাল গ্রীষ্ম ঘর্ম

সমতালে তাল রাখা প্রকৃতির ধর্ম।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতঃ তাপস কুমার সামন্ত

কবিতা

তাপস কুমার সামন্ত,

কলকাতা

রাধাচূড়া
 

ত সুন্দরী হয়ে সেজেছ রাধাচূড়া

আঁখি ফিরাতে পারিনি ফুলে ফুলে ভরা

তুমি যে কত সুন্দরী আগে তো দেখিনি 

দৃষ্টি আমার খুলে দিলে মনোহারিণী 

যেদিকে তাকাই তোমাকে দেখিতে পাই 

তুমি ছাড়া দুনিয়াতে আর কেহ নাই 

মন যে আমার কেমন কেমন করে 

আনন্দে ভরে যায় রূপের ডালি তরে। 

পৃথিবীতে তোমার কি অপরূপ সৃষ্টি 

মৌ ফুলে ভরে গেছে মধুকরীর বৃষ্টি

প্রাতঃ সন্ধ্যা তুমি যে আমার প্রেয়সী 

ভুলিতে পারি না আর তুমি যে রূপসী। 

আকাশে বাতাসে দোদুল দোলে ঐ রূপ 

মম চিত্তে ভরে যায় হয় না বিরূপ 

রাধা সজ্জিত হয়েছ চূড়ামণি দিয়ে 

বিস্মিত চঞ্চল মন দিয়েছি ডুবিয়ে। 

সারাদিন চলছে কত পাখির গান 

উলুধ্বনি শুনে মন হয় আন চান 

লেগেছে যেন তোমার বিয়ে 

তুমি মোরে ডাকিতেছ হাতছানি দিয়ে। 

আমি যেন বিহঙ্গ নিমেষে ছুটে যাই 

হৃদয় মাগে যেন তোমায় কাছে পাই 

শত চেষ্টা করেও হলাম না ফলঃপ্রসূ 

বিরহে মোর দু-নয়নে ভরে গেল অশ্রু।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ দীপঙ্কর বেরা

কবিতা

দীপঙ্কর বেরা

আমি নিজেকে ভাঙতে পারি নি
 

মি নিজেকে ভাঙতে পারি নি 
যেমন ছিলাম তেমনি আছি 
নিজেকে একটুও ভাঙতে পারি নি।

আমি সম্পত্তির ভাগাভাগিতে লোভ দেখেছি 
সেই অধিকার নিয়ে নৃশংসতা দেখেছি 
দেখেছি আক্রোশের বশে হাতিয়ে নেওয়ার 
ষড়যন্ত্র আর শত্রুতা।
হিংসায় জ্বলতে থাকা আগুনের লেলিহান 
আমার ঘরেও এসে আছড়ে পড়ে;
কেমন করে যেন একজনের গ্রাস 
অন্যজনে তার হক বলে খেয়ে চলে যায়;
চেয়ার দখলের জন্য কত রকমভাবে 

ওরা সব খেলে যায় জীবন-মৃত্যুর মিউজিক্যাল চেয়ার। 

আমি দেখেছি বারুদের মত চিংগারি দিতে
রাজনীতির ধোঁয়া 
আর তাতে জড়িয়ে পড়তে 
আমার ভাই আমার চেনা আমার অচেনা;
কিভাবে রাহাজানি আর শঠতা দিয়ে 
নিরীহ গরীব গোবেচারার রক্ত দিয়ে ইমারত তৈরি হয় 
সবুজ বাগান-মাঠের অলিতে গলিতে।

কিন্তু কোথাও আমি একটুও নিজেকে ভাঙতে পারি নি,
আগে যা ছিলাম এখনও তাই আছি;
আমি সূর্যকে দেখি রোজ সকালে উজ্জ্বল 
প্রাণভরে টেনে নিই সকালের অফুরান অক্সিজেন,
পাতায় পাতায় ভরা গাছের ডালে 
আজও পাখিরা নাচতে নাচতে গান করে;

তারপর কর্মের উল্লাসে পৃথিবীকে জাগতে দেখে আমিও লেগে পড়ি আমার জীবন সংগ্রামে।

আর নিজের শুদ্ধতায় ঘটনাকে বিচার করে

এগিয়ে চলি নির্মল পথে।
আশায় আছি কোন না কোন দিন 
ওই সব আমার দেখা-দের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে 
আর সমাজ তোমার আমার সবার মনের মত হবে।

তাই আমি আজও নিজেকে ভাঙি নি 
আগে যেমন ছিলাম এখন তেমনি আছি 
আর তেমনি থাকতে তোমাদের হাত
আরো কাছে চাইছি।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ দেবাশীষ চ্যাটার্জ্জী

কবিতা

দেবাশীষ চ্যাটার্জ্জী

 কলকাতা 

ভালবাসা
 

ছোটো নদীটির তীরে হেরিয়া বাঁশরিটিরে 
আনমনে কহে সেই বালা, 
আরবার সুরভিয়া ওঠে মোর হারা হিয়া - 
কোথা গেল মোর প্রিয় কালা। 

সঞ্চিত অশ্রুরাশি যাক মোরে নিয়ে ভাসি 
নিয়ে যাক প্রেমের মঞ্জর, 
যেথা সে মধুর নিশি কালস্রোতে গেছে মিশি 
টুটি সুখস্মৃতির পিঞ্জর। 

নদী কহে কলকলি যে গেছে ফেলিয়া চলি 
রাখিয়া সন্ধ্যালাজে তব, 
সে ক্ষণিক সুধাধারা যত হোক মনহরা 
প্রিয়তম কেমনে গো কবো! 

নিরজনে প্রতি পলে রুধিরে অশ্রুর জলে 
আঁখি তব দেয় গো অঞ্জলি; 
সে বিষম প্রেমজ্বালা সহিছ কেমনে গো বালা 
দিন যে গো যায় বৃথা চলি। 

কহে বালা তটিনীরে, তবু আমি রব চেয়ে, 
জানো না কি তারে ভালবাসি? 
এর বেশী নাহি জানি হতে নারি অভিমানী, 
ভালবাসা নেয় সব গ্রাসি।

অধি আত্ম নিবেদন
 

ন্ধকারের আবছায়াতে দীপ নেভা রাত ভরি, 
মন ভরা তব ছায়াকায়াসনে পরান যাহে যে সরি। 
অশ্রুত তব প্রাণগীতিমালা পরায়ে মম গলে, 
কি সুখ পাইয়া এ ছায়ামাঝারে 
হেথা হতে গেলে চলে? 
বারেক ফিরিয়া চাহ, দেখা - অদেখার মাঝে 
আজও কিছু তারা মিটিমিটি করে যে লাজে! 
যদি নাহি পাহ সাড়া, আস কি কারণে অভিসার সনে? 
নিশুতি নিরখি চাহ মুখপানে, 
শুধু দিবে যদি ব্যাথা মনে? 
শীতল কাঁকন - শিশির বিন্দু, নিভু নিভু মরা বিভা, 
সময় - রবির রাঙা ও কিরণে একাকার এই শোভা! 
এই শোভা মাঝে হাসি সাজে সেজে 
নিভৃত হয়ে আসি, 
এক বুক ব্যাথা ঢেলে দিয়ে হাসো 
আঁধার - মাখানো হাসি!

অবসাদ
 

জীবন স্রোতে ভাসিয়েছিলেম   
            আপন  তরিটিরে, 
সাধ ছিল মোর দেখব সাগর 
            নয়ন  ভরিয়ে। 
উজান বেয়ে কেবল চলি , 
       অন্তরে সাধ ভরিয়ে তুলি, 
বুঝি নাই মোর লেগেছে যে ঘোর   
         সাধ্য উহার নাহিরে; 
বৃথাই ভেলা ভাসিয়ে ছিলেম 
          আশার পাথারে। 

ভাঙল যখন  আশার ভেলা 
        সাঙ্গ  হল মনের খেলা, 
আবার যখন ফিরল তরী 
        জীর্ণ নদীর কুলে, 

ভেঙ্গে দিলেম স্বপন যে মোর 
         আপন মনের ভুলে। 

আজিকে হটাৎ চেয়ে দেখি 
      স্বপন জেগে উঠলো একি – 

চলল ভেসে আপন মনে 
            সে তরী ভাসায়ে 
ভাঙ্গা সাধের কান্না - হাসির 
           স্মৃতিরে কাঁদায়ে ।

 

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ দেবদাস ভট্টাচার্য্য 

মা

লিরেখাঙ্কিত মুখ, ন্যুব্জ শরীর বয়সের ভারে, 
অবিন্যস্ত কাঁচাপাকা চুল অযত্নে জড়ানো, 
কখনো বা তেলে জলে মেশামেশি দু’পাশে ছড়ানো,
কপালে সিঁদূর নেই, তবু তার চিহ্ন থেকে গেছে। 
স্তিমিত চোখের মণি, 
ভাঙ্গা ডাঁটিওয়ালা চশমা বারে বারে নেমে আসে,
আধময়লা সাদা জমির সস্তা কাপড়, 
আগেও দেখেছি তবে পাড়ের রঙ গেছে পালটে, 
ছিল লাল এখন ধূসর। 
দামী কাপড়গুলো ন্যাপথিলিন দিয়ে ভাঙ্গা ট্রাঙ্কে রাখা, 
সেই ট্রাঙ্ক আমার জন্মের আগে থেকে আজও আছে, 
ডালা ভাঙ্গা তবু তাতে তালা ঝোলে,  
কম্পাসের কাঁটা দিয়ে তালা খুলে কতোবার তালমিছরি সরিয়েছি। 
ছোট্ট মাদুরে বিকেলের পড়ন্ত বেলায় সারদা মায়ের মত 
দু’পা ছড়িয়ে দু চোখ নিবদ্ধ রাখে পুরাণে, গীতায়, রামায়নে।
গল্প বই দেখিনি কখনো। ক্লান্ত চোখে কখনো ঢুলুনি আসে, 

হালকা বাতাস এসে পাতা উলটে দেয়, 
তখনি চটকা ভেঙ্গে নেমে 
আসা চশমা তুলে ধরে আবার পাতায় চোখ রাখে। 
বুঝতে পারি, এলোমেলো মনে অতীত আঘাত করে, 
কিছু ভালোলাগা, কিছু বেদনার স্মৃতি। 

কবিতা

দেবদাস ভট্টাচার্য্য 

 কলকাতা 

দেখতে পাই পাতা জুড়ে শুকনো জলের ফোঁটার দাগ।

কতবার বলেছি, চশমাটা পালটে দিই? 

অমনি স্তিমিত চোখের তারায় আশনির ঝিকিমিকি, পান খাওয়া লাল ঠোঁট ভেঙ্গে দু’একটা অবশিষ্ট দাঁত উঁকি মারে, ফরসা ভাঙ্গা গালে হাসি ছড়িয়ে পড়ে শরতের পূর্ণিমার মত। 

নারে খোকা, বেশ চলে যায়। এতো শুধু চশমা নয়,
এ তোর বাবার – ভারী যত্ন করে সুধির স্যাকরা ডেকে বানিয়েছিল তুই যে বছর এলি।
দেখা যায়? 
যাবে না কেনরে? শুধু বইর পাতা নয়, কত কিছু দেখি, কত কিছু। 
হাল্কা হয়ে আসে ভাঙ্গা গলা, আমার গলার কাছে টের পাই আবেগের 
রুদ্ধ জলোচ্ছাস, বুকে পাষাণের ভার,
চোখ ভারী করে আসে দলে দলে শ্রাবণের মেঘ। 

উচ্চপ্রযুক্তির যুগ, চারিদিকে বিলাসের, আমোদের অজস্র সম্ভার। 
ইচ্ছে করে কিছু তুলে দিই। কিছু নেবে? জানতে চেয়েছি কতবার। 
অমনি সেই ফরসা গালে ফোকলা হাসি - সব আছে, বেশ আছি খোকা।
তোরা ভালো থাক।
নির্নিমেষে দেখি, কি নির্লিপ্ত! কোন চাহিদা নেই, প্রত্যাশা নেই।

 নিজেই নিজেতে সমাহিত, রাখেনি কিছুই সঞ্চয়ের মত করে

শুধুভাঙ্গা ট্রাঙ্কটি ছাড়া। চারিদিকে দেখি, মনে হয় সময় থমকে আছে এইখানে 

নিস্তরঙ্গ পুকুরের মত, তাকে ঘিরে তুলসি মঞ্চ, আকাশ প্রদীপ, বেল জুঁই শিউলি শেফালি – নিম আমড়া তেঁতুল নারকেল সপেদার গাছ,থানকুনি হিংচে পুঁই শুশনি কলমি আরো কত শাক, কতো পাখি, আদুরে বেড়াল, রোঁয়া ওঠা খয়েরি কুকুর। 

তার কোন পরিচয় নেই, খবরের শিরোনামে নেই, 
ভাবেনি কখনো একটা পরিচয় হোক,
অন্য পরিচয় একান্ত নিজের, 
মাতৃত্বের পরিচয়ে খুশি আগণিত মায়েদের মত, 
সারা মন জুড়ে আমি, আমি তার খোকা, আমাতেই সব সফলতা,
আমি তার মাতৃত্বের চরম পূর্ণতা। 

সমগ্র বিশ্বের কাছে সে সামান্যা নারী,
অন্য কোন পরিচয় নেই, নেই কোন ছবি,
সে আমার মা, একান্ত আমার, সে আমার সপ্তসিন্ধু, 
মহাতীর্থ, সে মহাসাগর, 
সে আমার সমগ্র সত্ত্বায়, সে আমার এ বিশ্বপৃথিবী।।   

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ দেবোপমা মিশ্র

কবিতা

দেবোপমা মিশ্র 

কনে দেখা আলো

কাশে যে গলছে সোনা

  পড়ছে চুঁয়ে চুঁয়ে,

সারা আকাশ দিচ্ছে ঢেকে

  যাচ্ছে সোনা ছুঁয়ে ।

 

আকাশ থেকে পড়ল সোনা

   পড়ল আমার ছাদে,

ঘিরল সেই আকাশ সোনা

  আমার শরীর মাঝে ।

সূর্যখানি পশ্চিমেতে

  হালকা টিপের মতো-

নারকেলের ঐ গাছের মাঝে

   দিচ্ছে উঁকি যত ।

সোনা নিয়ে করছে খেলা

   সারা আকাশ জুড়ে,

সেই সোনাতেই পাখনা মেলে

   যাচ্ছে পাখি উড়ে ।

 

একটু পরেই সোনার রঙে

    মিশে যাবে কালো,

হারিয়ে কোথায় যাবে যে এই

  “কনে দেখা আলো ।‌‌"

কবিতঃ দেবায়ন ভট্টাচার্য্য

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতা

দেবায়ন ভট্টাচার্য্য

ইচ্ছে মৃত্যু

কাঁচের ঘর আর 
পুতুল খেলার হাত-

নিয়ম করে নিয়ম মানা... 
সময় হলে – ‘ও ছুড়ি তোর বিয়ে!’

তাসের দেশে ইচ্ছা মৃত্যু! 

খাঁচার পাখি উড়বে খাঁচার মাঝে!  
আকাশ তাদের চোখের তারায় ভাসে। 

আমায় চেনে নি কেউ, চিনবে না তুমি। 

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ দীপান্বিতা ব্যানার্জ্জী

কবিতা

দীপান্বিতা গঙ্গোপাধ্যায়

নতুন দুর্গা

 

কাশ জুড়ে মেঘ করেছে , সুয্যি ঢলে পড়ে

ক্লান্ত মুখে ওই মেয়েটা , একলা  ফেরে ঘরে।

পাগলা আকাশ মত্ত হাতি দস্যি দামাল ছেলে

বাজের শব্দে শহরের বুক উঠছে কেঁপে দুলে।

অকাল সন্ধ্যে নামিয়েছে কোন খুনীর হাতের ছুরি

জীবন যেন পথ হারিয়েছে  ভোকাট্টা এক ঘুড়ি।

শূন্য রাস্তায়ে বৃষ্টিরা কথা কয়

একটানা যেন বর্ষার বিউগল বেজে যায়

তবুও গাছেরা নিঝুম প্রহরী একা উদাসী

 

সাক্ষী হয়ে থাকে একা মেয়ের অন্য এক কাহিনীর ।

 

থরে থরে হাতে তার তুলে দাও রণসম্ভার

অসুরের বুক ফুঁড়ে চালিয়ে দিও ত্রিশূল তার

বেদনার সানাই থামিয়ে জয়ের উল্লাস দাও ঠোঁটে

অকাল বোধনে ওই মেয়েটা যেন দুর্গা হয়ে ওঠে।

 

​​আজ মহালয়া।

একটু পরে শুরু হবে মহিষাসুরমর্দিনী।

বীরেন্দ্রকৃষ্ণের জলদগম্ভীর কণ্ঠস্বরে।

তারপরে টি ভি-র হরেক চ্যানেলে হরেক বেশে সজ্জিত হয়ে বিচিত্র দৃশ্যের অবতারণা করবেন হরেক অভিনেতা-অভিনেত্রী।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়

কবিতা

দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা 

আলবাট্রস 

 

মুদ্র থেকে ফিরে এসেছিল নাবিকেরা

দুটো  আলবাট্রস  এসেছিল তাদের সঙ্গে। 

নাবিকেরা খুশিতে ডগমগ

দুদন্ড শুঁড়িখানাতেও বসল না,

সোজা  সাগরপারের পথ ধরে  হাঁটা দিল

বউ আছে ঘরের কপাট ধরে দাঁড়িয়ে।।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ দিলীপ মজুমদার 

কবিতা

দিলীপ মজুমদার 

পর্ণশ্রী,কলকাতা  

ছন্নছাড়ার  ছিন্নছড়া 

১.

স্পর্শকাতরতা ঢাকে চুল্লির আগুন
প্রেম-প্রীতি-আবেগাদি হয়ে যায় খুন
২.
ইগো খুব ছেলেটির ইগো ধুয়ে খায়
এ ইগোই করে তোলে তাকে নিঃসহায়
৩.
নিউরো সার্জারির ফলে ভ্রষ্ট হল স্মৃতি
সদানন্দ সে এখন বেদনা-বিস্মৃতি
৪.
নীতি নেই নেতা আছে নির্বাক জনতা
বাচাল ভাঁড়েরা শুধু করে কথকতা
৫.
হৃদয়ে পচন ধরলে সার্থক মানুষ
বৃত্তের বাইরে তার নেই কোন হুঁশ
৬.
রামনাম পুঁজি করে নামো পথে ভাই
সে জাদুতে ভুলে যাবে কলকাতা মুম্বাই
৭.
লতা-পাতা গাছ-পালা বিষম জঞ্জাল
অথচ এসব ছাড়া আসে রুদ্রকাল

 

৮.
গোমাতার মাংস খায় কোন নরাধম
বরং মনুষ্য মাংস অতীব উত্তম
৯.
চাহিদার শেষ নেই ব্যাপ্ত চরাচরে
ছিন্ন হই ভিন্ন হই তারই তো নখরে
১০.
নোট বন্দি জিন্দাবাদ ভোট বন্দি তাই
তাহলে কোথায় যাবে জগাই-মাধাই
১১.
নাম-না-জানা মানুষটিকে নমস্কার
ধরে দেখি হাতটি বড়ো উষ্ম তার
১২.
শ্রেণিসংগ্রামের ধার তেমনটা নেই
কোথায় কেমন করে হারাল যে খেই 
১৩.
সিরিয়ালগুলো সব দ্রৌপদীর শাড়ি
শেষ হয়ে শুরু হয় সাত তাড়াতাড়ি
১৪.
ফেসবুকে হোটাস-আ্যপে নিমগ্ন হৃদয়
চুরি হয়ে যায় তার আত্মপরিচয়
১৫.
মহানাগরিক হল মহান নাগর
কে-ই বা হিসেব রাখে কে আপন-পর

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ ধীমান চক্রবর্তী

কবিতা

ধীমান চক্রবর্তী

স্বপ্নে আমি আজও

খনও সে বৃদ্ধ গাছ..
মাথা উঁচু রয়েছে দাঁড়িয়ে..
ঘাসের চাদরে,

ভাঙা চোরা স্বপ্নেরা..
জোনাকি, পরাগরেণু অথবা শিশির কণা হয়ে..
টুকরো ভাঙা সময়ের
আয়নার মতো..
নতুন স্বপ্নের বিচ্ছুরণ
করে যায় পরম আদরে।

প্রত্যেক নতুন ভোর..
আসে যার শিরায় শিরায়
রন্ধ্রেতে বিষাক্ত পরমাণু..
মিশে আছে গভীর তন্ত্রিতে..
দগ্ধ, তবু পরিতৃপ্ত ভালোবাসা হয়ে..

নিদাঘ গ্রীষ্মের দিনে
হেমন্ত বিকেল শেষে
কখনো বা অঝোর ভাদরে।।

হেলাফেলা সারাবেলা 

রে 
তোর মেঘজোছনা হাসি, 
মনে 
যেন বাজায় উদাস বাঁশি, 
আহা 
তুই বল দেখি একবার, 
হয়ে 
যাই সপ্তসাগর পার, 
ছেঁচে 
আমি সাত সাগরের জল, 
যেচে 
তুই একবার শুধু বল, 
যদি 
না বলতে ইচ্ছে হয়, 
নদী 
মন পাগল স্রোতে বয়, 
তবু 
কিছু বললি না যে তুই, 
আজো 
আমি স্বপ্নে তোকে ছুঁই, 
স্বপ্নেই 
ভাঙা গড়ার খেলা, 
চলে 
যায় খেয়াল খুশির বেলা, 
শেষ 
রাঙা বিকেল বেলার আলো, 
তোকে 
যে বেসেছিলাম ভালো, 
আজ 
তোকে খুঁজবো না তো তাই, 
আমার 
আর খোঁজার সময় নাই, 
যদি 
কোনো যুগান্তরের পারে, 
নদী 
ধোয়া হলুদ বনের ধারে, 
আধো 
আলো মিশবে অন্ধকারে, 
সেই 
দিন আবার নতুন করে, 
যেন 
চিরদিনের জন্যে শুধু তোকেই আমি পাই।। 

কোথায় আছিস 

"কোথায় রে, মাঠেতে যাবি না ?"

.. তবু তোর কোনো উত্তর নেই,.. 
শেষে তোকে রেখে, রেগেমেগে.. 
নিজেই গেলাম চলে মাঠে। 

সে এক বসন্ত ছিলো বটে.. 
.. কৃষ্ণচূড়ার আগুনে জ্বলত পাতা, তার.. 
.. ডানদিকে সাইকেলে বাঁক নিতে গেলে.. পায়ের তলায়, 
.. নাগকেশরের লুটোপুটি.. 
আশেপাশে সমুদ্র কোথায়? 

শুনেছি বালিতে নাকি গড়ে ওঠে ঘন ঝাউবন, 
কিন্তু দেখেছি.. 
.. সবুজ ঘাসের সেই মাঠের পাশেই..আদ্দিকালের কিছু 
ঝাউ মাথা তুলে.. 
ঝিরঝির চামর দোলায়। তবু তুই মাঠেতে এলি না, 
ডাকাডাকি সার.. 
বেলাশেষে নিয়মমাফিক.. 
সন্ধে নামে.. 
মুহূর্তেরা বলে "টিক্ টিক্".. 
সবই কি ঠিক করা ছিলো?.. 

.. না কি সবই বেঠিক? 

অনেক বসন্ত আসে .. 
তোকে ডেকে ডেকে.. 
.. ফিরে যায় উত্তর না পেয়ে 
ঝাউপাতা দিয়ে মুখ ঢেকে। 

আজও এলে ঝিরঝির দুপুর.. বিকেল , চৈত্রের ফাঁকা মাঠে.. 
আজও তোকে ডাকি,.. 
" কোথায় রে, মাঠেতে যাবি না?.. 
শুনছিস, তোর হলোটা কী? " 

কী যে হলো.. কী যে হয়েছিলো.. 
.... কোন অভিমানে?.. 
... মেলে না উত্তর, আজও 
তার ই সন্ধানে.... 

হাঁক পাড়ি.. 

" রাজুউউউউ.. তুই কোথায় আছিস?" 
যুদ্ধে ছিলি, আমাদের... 
.. স্বপ্নেও থাকিস ।। 

কবিতাঃ নিলাদ্রী দেব

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

শিরনামহীন কবিতা

- নিলাদ্রী দেব, কোচবিহার 

১)

প্রতিটি সীমান্তের গার্ডওয়ালে আদিমতা লেগে থাকে

আমরা জানি,

কিন্তু খেয়াল করি না জুলাইয়ের মন খারাপে কিংবা

ঝোরো বিকেলের বিষণ্নতায় কোনো হাওয়া মোরগই চোখে চোখ রেখে ডাকে না ডাকতে পারে না পরিচয় ক্ষিদে জোরালো হয় ঠিকই ... ঝাপসা চোখে পিঠের পেছনে এক অপরিচিত পাড়া,

আসলে কলোনী ক্রমশ এগিয়ে যেতে হয়

কোনো এক সীমান্ত অপেক্ষায় থাকে

কবিতা

নিলাদ্রী দেব

২)

প্রতিটি বৃষ্টি কণায় অনেক অনেক বারুদ লুকিয়ে থাকে।

জমাট বারুদ।

যা প্রেমের কথা বলে।

কখনো প্রেম বহির্ভূত সমীকরণের কিংবা স্বপ্নের।

বারুদমেঘ ছোঁয়া জলে নাভি বিন্দু ভিজিয়ে নিলে জেগে ওঠে শৈশব। বানভাসি মাছের মত স্কুল কামাই।

সুপুরি গাছের গায়ে পরজীবী পানপাতায় পিঁপড়ের ডিম।

দোলা বাড়িতে পাটফুলের নির্বিকার চেয়ে থাকা।

কখনো সখনো লজ্জাবতী গাছের যুবতী হবার চেষ্টা।

ইত্যাদি।

প্রভৃতি।

এরপরও নীরবতা ভাঙলেই আমরা স্মৃতি ছেড়ে বারুদ বিক্রি করি।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ পার্থ ঘোষ

কবিতা

পার্থ ঘোষ, নারকেলডাঙা রোড, কলকাতা 

ঝরা পাতা

যেতে হবে একদিন এপার ছেড়ে,  আমায় ঐ দুনিয়া- এ

সাদাকালো আবছায়াতে যখন এ চোখ দুটো বুঝে যায়ে।

সবার কান্না-সবার স্বপ্ন-সবার হাসি হয়ে,

হেঁটে চলে যাবো কোনও একটা দিন,

স্বপ্নের লাশ হয়ে।

সোনার রথে বসে আমি, দেখবো গোটা বিশ্ব জুড়ে,

শেষ বিদায় দেবে সবাই, যখন এই জীবন্ত দেহটা যাবে পুড়ে।

আবার একটা নতুন জগত, খুঁজে পাবো আমি

এ জগত থেকে তখন আমার পরিচয় হয়ে যাবে বেনামী।

কত ইচ্ছা কত স্বপ্ন ছিল এই জীবন ঘিরে, তবুও ডাক আসতে- ই

নিতে হল বিদায়, নৌকা ভাসিয়ে ঐ নদীর তীরে।

আমিও হয়তো এসেছিলাম শিবের জটা হতে,

গঙ্গা দিয়েছিল স্থান পৌঁছাতে মায়ের গর্ভে, তাঁর বেগের স্রোতে।

আবার হয়তো তাঁদের ডাকে, যেতে হবে আমাকে;

শেষ অস্থি খানি ভেসে যাবে আমার, ঐ গঙ্গার বুকে

তারপর…………………

তারপর কত না অজানা–অচেনা-চেনাদের ভিড়ে,

আমি ঘুরবো ওপার জুড়ে, মিলিত হবো সবার মাঝে হারাতে।

আবার আসব আমি এ চেনা শহরে, কত না রূপ নিয়ে,

চিনবি না তোরা আমাকে আর, আমার অতীত স্মৃতি রয়ে যাবে

এখানে ঝরাপাতা হয়ে।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ প্রত্যুষা ব্যানার্জী চক্রবর্ত্তী

ভিক্ষে-পাত্র

খালি পেটে,বাটি হাতে,
বসে আছি ভর দুপুরে,
তোমার দিকে তাকিয়ে,
দুটো ভিক্ষের আশাতে;;

        তোমরা কবি অথবা লেখক,
         তোমরা অতীব ভদ্রলোক,
          অথবা তোমরা গায়ক,
         ভালোবাসার খাদক!!একটু তাকাও রাস্তার দিকে,
একটু কিছু দাও পাত্রে,
অপচয় হল,ভাবলে,


 

কবিতা

-   প্রত্যুষা ব্যানার্জী চক্রবর্ত্তী (রিয়া)

তবু অজান্তে হাসি ফোটালে;;

         আমরা সমাজের ক্যানসার,
         অধিকার নেই ভালো থাকার,
         সময় নেই আমাদের কথা শোনার,
          দুরস্ত আমাদের নিয়ে লেখার!!

ভুল করে ফেলো একটুকরো,
একবার যদি পারো,
ভরবে ভিক্ষে-পাত্র,
তাতেই আমরা সন্তুষ্ট!!

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ পল্লব হাজরা

কবিতা

-   - পল্লব হাজরা 

অবুঝ মন

বর্ষার  প্রথম  বৃষ্টির  মতো  ছিল 
অশ্রু যেন খুশির  ঠিকানা দিল
সময়ের সাথে  বর্ষা  এল  ধেয়ে 
আবেগে  অশ্রুও যাচ্ছে  বেয়ে 
উষ্ণতার খোঁজে ভাবুক  মন
সবার আড়ালে রয়েছে আবেগপ্রবণ 
অতি উষ্ণতা অসহ্যের কারণ  হল
নতুন স্বপ্নে আবার বর্ষার পিছু নিল

 সুন্দরতার মোহে পড়িয়া 
কাঁটায় বিঁধল বুক
গন্ধের দিকে বাড়িয়া পা
আজ রক্তে লেখা সুখ
আলোর আঁধার ভাবিয়া 
প্রদীপ কে করিলাম আপন

কে জানিত, অল্প সময়ের সাথী
এই কথা আঁধারে করিয়াছে গোপন

তবু অজান্তে হাসি ফোটালে;;

         আমরা সমাজের ক্যানসার,
         অধিকার নেই ভালো থাকার,
         সময় নেই আমাদের কথা শোনার,

          দুরস্ত আমাদের নিয়ে লেখার!!

ভুল করে ফেলো একটুকরো,
একবার যদি পারো,
ভরবে ভিক্ষে-পাত্র,
তাতেই আমরা সন্তুষ্ট!!

আজও যদি চোখে পড়ে গোলাপ 
ফিরিয়ে দেয় স্মৃতি ভরা আলাপ 

ক্ষণিকের জন্য আঁখি হয় স্তব্ধ 
জন কোলাহল এক নিমেষে বন্ধ 
স্মৃতিভরা দিন যায় মনে পড়ে 
অশ্রু আনে জল আবেগ প্রবণ হয়ে 
খানিক বাদে জীবন আবার নবপথে 
পথ চলা শুরু একাকীত্বের সাথে 

অতি সক্রিয় কঠিন বাস্তব 
ভারসাম্য হীন সমাজ শুধুই নীরব 
কানে ভাসে সত্যের জয়গান
তবুও আখিঁর কাছে সবই ম্লান 
অর্থ আজ মানবের পরিচয় 
সভ্য সমাজ নিচ্ছে মেনে পরাজয় 
অন্তরের ভাষা আসে না মুখে 
কষ্ট তাই পড়ল চাপা বুকে 
সমাজ আজ অর্থের দাসত্ব নিলো 
কবে নতুন ভোরের আলো ফুটবে বলো?

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ প্রজ্ঞা পারমিতা রায়

কবিতা

প্রজ্ঞা পারমিতা রায়

বোসগার্ডেন, কলকাতা

আমাদের গ্রাম 


দূরে সমুদ্র, আমি একা বসে আছি নীল

সমুদ্রকি আনন্দ কি আনন্দ ঘননীল
সাগর যেন মেলেছি ডানা
পাল তোলা নৌকা সারি সারি দোলে
সুখের সমুদ্র মন মহলে
কেউ যে কারো নয় ভাবি কেন মনে
খালি হাতে ফিরে যাব ভাসি নয়নে
সঙ্গী নেই সাথী নেই কেউ নাই কোথা
নৌকাখানি শুধু ভেসে যায় জলে
সে নৌকা করে যাচ্ছে সবাই
আমি একা বসে আছি কোথা কেহ নাই
নাই নাই বলছে গেহ নাই নাই বলছে সাগর সমুদ্র।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ পীযূষ কান্তি দাস

কবিতা

-পীযূষ কান্তি দাস 

"অমূল্য ধন "
-   
 

ভোরের পাখিরা কিচিমিচি করে 
বলে তারা সব ডেকে , 
"ওঠো ওঠো সবে বেলা যায় বয়ে 
ওঠো রে ঘুমের থেকে । 
অলসতা হলো বড়ো শত্তুর 
ত্যাজো তারে এইবেলা , 
সময়ের কাজ সময়ে সারতে 
কেন করো  অবহেলা "? 
সময় সব'চে অমূল্য জেনো 
গেলে আর ফেরে নাকো , 
আফসোস ছাড়া জুটবেনা কিছু 
পরে তারে যতো ডাকো । 
সেইজন শুধু  হয় রে সফল 
যে বোঝে সময় দামী , 
সময় দেবতা তোমার চরণে 
প্রণাম জানাই আমি ।।

কবিতাঃ বুবাই হাজরা 

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতা

বুবাই হাজরা 

প্রাপ্তি

নিরন্তর কোলাহল শূণ্যতা খোঁজে 

এক পশলা বৃষ্টিও পড়তে চায় নিজে​

অন্ধকারের চাদরে মোড়া নীরবতা

একান্তে তৃষ্ণা মেটায় গভীর শূণ্যতা

সমুদ্রের বুকে আছড়ে পড়া ঢেউ

সুখময়ের ঠিকানা করে নেয় কেউ

ঝোড়ো হাওয়ার ক্লান্তি অবসাদ

গুড়িয়ে দিয়ে নবনির্মিত রাজপ্রাসাদ

কোকিলের কণ্ঠস্বর দিনের জানলায়

সুপ্রভাতের আগমন বার্তা জানাতে চায়

রেশমের পোষাকের বন্দীরত উষ্ণতা

রবির আগমনে পায় খোঁজে মলিনতা

প্রাপ্তি রোগে আক্রান্ত প্রকৃতি হইতে মানব

সরলতায় না মিলিলে হতে পারে দানব

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ বলাশাদমান আক্তার

কবিতা

বলাশাদমান আক্তার

বিবেকের...

আমি তোমার কান্না ভেজা কবিতায়

আমি তোমার আজব ভাঙা শহরটায়

আমি তোমার মিষ্টি হারানো সময়টায়

সারাক্ষণ তোমাকে দেখি 

আর তোমাকে হাসাই

কে বলে তুমি হাসতে পারো না

এই তো হাসছো তুমি…… বিলীন যন্ত্রণা

কেন বুঝেও নাবুঝের অভিনয়

সে তো আজ আর তোমার নয়

দূর থেকে বয়ে আসা বাতাসের

ইচ্ছে তোমাকে উড়িয়ে নিবার

বৃষ্টি নেমেছে মাত্র যাও না তুমি  

দরজার বাহিরে ডাকছে দুষ্টামি। 

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতাঃ ভাস্কর সিনহা

কবিতা

ভাস্কর সিন্হা

হিজিবিজি

 

রস সবুজাভ ডালে ব্যস্ত পাতার কারিকুরি,

ঈষৎ সবুজ বোঁটায় হলুদ ব্যাপ্তিতে মৌমাছির মধু চুম্বন।

বাউন্ডুলে সূর্যিজ্য়াঠা যবে পশ্চিমে দেবে পাড়ি,

সধবার একাদশীতে

তবে চন্দ্রিমার ব্যাকুলিত সম্ভাষণ।

সিক্ত জমির বীজে ফসল

দিয়েছে উঁকি,

গোলাখানায় আজ আর নেইতো কিছুই ফাঁকি।

পেলব হস্ত ও শুভ্র শঙ্খগুলি যেন হর্ষিত কমল বনে, দূরাবাসে এসে

ক্ষণিকের স্মৃতিপটে অবিরল ছবি জন্মায় যে মনে। আবছায়ারা  খালি কথাই বলে ভোরের রাতে এসে।

আধোভ্রমে, আধোঘুমে,

অধরা, নাধরা বাক্য়বুলি কোথায় হারায় যে হেসে।

বেড়ার কোন গলে,

কার্নিশের ফাঁক পেলে,

শীত ঘিরে আসে,

শিশির ঝরে পড়ে সঙ্গোপনে।

ঘাসের বুকে নিম ফুলের সুঘ্রাণ,

ইতি- উতি ঝরে পড়া, রহস্যের আবিলতা।

মিলিয়ে যায়, হারিয়ে যায় অজানা বুনো পথের মতো। চকিত ঝোড়ো

আবহাওয়ায় যদি ফিরে আসে কিছু হারানো বাস,

ধূলিধূসর কিছু ব্যথা।

নিজস্ব প্রাপ্তিযোগের স্মৃতি- সততই মেদুর।

খুঁজে ফেরা যার রঙমশাল আর হারানো সুর।

পাহাড় থমকায় না

জানালার পাশে ঘুমে আছে পাহাড়।

ক্ষণে ক্ষণে সঙ্গোপনে

                    নিশিযাপীদের অর্ধ উল্লিখিত, অস্পট উচ্চারণ।

আঁধার জড়ালে ওই অসীম সোহাগে

                     গাঢ় সবুজের গানে।

কোনে কোনে, টিলাপারে

জ্বলে যেন কিছু বাতি।

মায়াময় নিকষ মোহময় অসীমে

          যেন সুমেরুতারা দেয় ফাঁকি।

 

এইখানে মাঝরাতে খাদপরে

           পিছলে পড়েছে তিনপ্রাণ।

জানবে জাগতিক রীতি- বোধ

যখন স্বর্ণরবি নিশাশেষে

 জাগরুক বাতায়নে। নিষ্করুণ সবল অভিঘাতে।

স্মৃতিসুধা

 

তালডিংলি পেরিয়ে, ময়নাগুড়ি এড়িয়ে,

তিস্তাপাড়ের মংপোতে হয় দেখা।

ইলশেগুঁড়ির মতো বৃষ্টি ছিলো সেসময়।

মূর্তির জলে মিলিয়ে যখন যায় চাপরামারি আর গোরুমারার আরণ্য়িক কুহকতা।

হাজারো পক্ষীর ঐক্য়তানের আবেশ,

মনভরা রঙ্গিন সে উচ্ছ্বাস।

টিক, শাল, শিমূল, শিরীষ আর খয়েরের উদ্দামতা পেরিয়ে,

বিষহারা পালায় রাজবংশী নৃত্য় শেষে,

মাগুরমারির করমে।

বন্যেরা বনেই আনন্দিত,

দেখতে দেখতেই দামাল ঐরাবতে বস্কাদ্বার

যায় যে পেরিয়ে।
 

চালসা- খুনিয়া- ঝালং পথে বিন্দুপ্রান্তে সিন্ধুমাখা

কাঞ্চনজঙ্ঘা।

পুণ্য়ব্রতা তোর্সায় অবগাহনে সিদ্ধপ্রাণা।

চায়ের মেজাজী আবেশ বয়ে চলে ভিজে,

শীতে মোড়া ইংরেজী বাংলোয়।

প্রথম প্রেম শুরুর পথে- প্রথম কর্মে আসা, এইস্থানেই। ভোলার নয় লখুয়ার শীতের ক্ষণেক রোদে নিষ্পাপ সেই হাসি।

কেবল সাহেবের জুতাছাপ শুকিয়ে যায় যে তার পিঠে। আর নাম না জানা এক সুবেশী নেপালী গুড়িয়ার

উচ্চকিত হাস্য় খালি ডানা ঝাপটে নামে সমতলের মেদুর পথে।

বিরস পারিভ্রমণ

 

শুভাকাক্ষী হে, অতি বিরস এ চলা।

কলাপত্রে পাত পেড়ে

দুই দলা কিছু জ্বালা।

মদিরতার মোহ নেই যে সুলভ সুরায়-

আছে যা বিবশতায়,

স্মৃতিবিবাগীতায় বা অন্তে রিক্ত বিবমিষায়।

স্বার্থকামী, স্বভূমে গগনব্যাপী লালসার হোমযজ্ঞে নিঃস্বের আহূতি।

প্রোজ্জ্বল যেন শীর্ষে মুকুটখানি আর অপরিবর্তনীয় সুশ্রী

কর্মকুন্ঠ সেই সিংহাসনী।

নিষ্প্রভ রিক্তের চকিত পশ্চিমা নিঃশ্বাস,

চতুর্দিকে হারায়ে গেছে যে কবে।

ক্লেদাক্ত, মৃতপ্রায়, সর্বহারাগন উচ্ছিষ্টে খুঁজে

মরে যে জীয়নকাঠি।

চার্চিলে হায়, আকাল কখনোই দেখে নাই কালাপানির পাড়ে।

 

কোন উপায়ে এই বাঁচা?

সহজিয়া আলো, বাতাসে আর জলের সন্তরণে বাঁচা যে

অভিসম্পাতময়, পরিস্রুতের সুদৃশ্যয় বিপণনে দীনচেতন গেছে যে হারায়ে।

ফুরিয়ে যেতে- যেতে, প্রান্তিক হতে- হতে,

খামের রোগে মাথা কুটে মরা;

হয়তো বা মরিচঝাঁপির ছাউনিতে দুঃসহ এক দমবন্ধের দানবীয় লীলা।

জালিয়ানওয়ালাবাগ বলে যে,

বা ইহুদি বস্তির নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ-

মানুষে- মানুষের সাংঘাতিক শত্রু এই শুধু নিশ্চিতরূপে বলা।

ঘরছাড়া পাখী

 

রপাখী ঘরছাড়া বহুদিনের তরে-

করে মন আনমন, আকাশীজ্বরে।

শীত ভুলাতে দিয়েছে পাড়ি,

শত সহস্র যোজন-

ডানায় পালকে নিয়েছে শুষে

কিছু রোদ্দুর আর শ্রম।

ছোট্টো নীড়, মরমি লতা দুয়ার জুড়ে।

গৃহসজ্জায় কতশত আলপনা।

 

আর কি ফিরিবে?

কভু জিজ্ঞাসিত মনে?

দেশে দেশে, দশে দশে, মিশিয়া রহিছে প্রাণ।

বিকশিত শাখা প্রশাখা।

আঁধার ঘনালে তবু, নদীপারে গুল্মবনে

জোনাকি জ্বলে ওঠে।

মূল দেয় টান,

নাভির ভিতর, হৃদয় কি চমকিয়া ওঠে?

দুরুদুরু বক্ষে।

মরুমহীরুহ

 

শ্চিমের না কি, উত্তরাগত সেই হাওয়া?

সব এলোমেলো, খেঁজুরে পাতার

অবিন্যস্ত রূপে পাওয়া।

থমকে এসে দুয়ারে শুষ্ক নিম ডাল, আধো ভঙ্গুর,

হতভাগ্যয় পাতা।

উত্তরের সাগর মুকুটে, পূর্বে জনপদ,

এই মরুদেশে পথহারা তাই, ঢুঁড়ে মরেছি যোজন বিস্তর।

খুঁজে ফিরি সুবর্ণ মরীচিকায়

ঘুমে- আধোভ্রমে, গৃহস্থ মোরগের সুপ্রভাতীয় বন্দনায়। কুয়াশাময় সেই প্রহেলিকা-

আদ্যন্ত নগ্ন যে, বাহুডোরে আগলে রেখেছে নগ্নিকারে। রসায়নে সিক্ত হয়ে জন্মিছে আখ্যান-

প্রেমে, আবেগে, আবিষ্ট বীজ মন্ত্র যে মহীরুহতার।

শাখা-প্রশাখায় আকাশ চুম্বিতে, ধর পাকড়ে

চন্দ্র-তারা।

মূলস্থ সজীবতার সন্ধানে, গহন মৃত্তিকায় আপনহারা।

সৌরভাভিলাষী

সৌরভটুকুই থাক বলি।

যদি হয় এতটুকু উঁচা-

থেকে যায় বেশ কিছুদিন,

যদি হয় অবুঝ ক্ষীণ-

মিলিয়ে যে যায় কিছুক্ষণেই।

যাবই সে তো সত্য়-ই

         এ এক চরম নিদান।

         

শুধু মনে রাখা

                 এই চিত্রময়-

         মনপৃষ্ঠায় কিছু আঁকাজোকা;

গাঢ় তুলির টান, উজ্জ্বল রঙিন পরত

চকিতে আসে মনে, ক্ষণে

কিছু রয়ে বসে বিবর্ণ, ধূলিময়,

অনাবিল এক ভুলিমনে।

সাঁঝের পলাশ

 

ফুটপাত জুড়ে ঝেঁপে নামে সাঁঝ,

আঁধার ঘিরে ধরে দিবালোকের গ্লানি।

টিমটিমি জ্বলে তারাবৎ কিছু বাতি।

দগ্ধোদর কৈশোরের জ্বলৎ

স্বপ্ন মিশে যায় কুয়াশায়,

পোড়া ছাই ছন্নছাড়া দিগ্বিদিকে,

যেদিকে খুশী- হাওয়ায় ঘুড্ডি ওড়া।

কিছু দলা ভস্ম জেদী, আঁকড়ে থাকে যেন

পুঁটুলির পাশে।

দুদিনের এই রাগ, ক্রোধ, আবেগ 

প্রশমিত যবে রমণে, লোভে, হীনতায়- সাধারণ মানে।

 

দুহাতে কুশ্রীতা মেখেছি কতো?

জানে কি এক ভারতেই শত কোটি ভারত?

নিরন্নের, বাদীর- বিবাদীর, জাতির- বেজাতের,

ধর্মের- অধর্মের, উচ্চ- নীচের, ভাবের- অভাবের, দুঃখের- সুখের-

কারে ছাড়ি- কারে যে ধরি?

হায় রে, সব যে বসে আপনার সনে।

কখনো নিজের তরে তোমারে মানিনি।

ছিনিয়ে নিয়েছি-

যত কুরুবিন্দ, ফিরাই দিয়াছি তব শুধু কুরব আর কুরন্ড।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

Anchor 1

শিক্ষাগুরু

যাঁদের সান্নিধ্যে আজ এ পর্যন্ত
আদিতে জানাই তাঁদের শ্রদ্ধা নিবেদন
পেয়েছি আলোর সন্ধান-দিয়েছেন যাঁরা অকৃপণ হস্তে।
থকো যতই দুরে , স্মরি সর্বক্ষণ।
হয়তবা স্বচক্ষে দর্শনের অন্তরালে , অলক্ষ্যে
তবুও হৃদয় কোঠরের একান্ত আপনজন
পদধূলি যাঁদের মোর পাথেয়।
ক্ষণতরে হলে ভূমিকম্প নেমে আসে
ধ্বংস যজ্ঞ অগণিত।
জ্ঞাতে-অজ্ঞাতে যদি হয়ে থাকে ভুল
ক্ষমা চাচিছ বারে বারে নতশিরে বিগ্রহ নেত্রে।
পুত্র যতই মাকে দু:খ দেয়
তব পুত্রের মঙ্গল কামনায় আত্মবলি।
হে শিক্ষা গুরু
শিক্ষার আলো বিলিয়ে
দিয়েছ যারে শূন্য পাত্র ভরে
জ্ঞান বারি সিঞ্চনে
বিড়ম্বিত এক বন্দির আঁখি
অশ্রুসিক্ত তব নাম স্মরণে।

বেহুঁস

 

যৌবন কালে নারী পুরুষ

প্রেম আগুনে থাকে বেহুঁস

সব বন্দি রঙ্গিন চশমায়।

পাহাড় পর্বত সাগর নদী

আকাশ পাতাল প্রকৃতি বন্দি

আবেগঘন ফুর্তিতে জীবন কাটায়।

ধর মার শক্তির বলে

ডানা মেলে নীলাকাশে চলে

শেষের দিন স্মরণ হয় না জোয়ারে নৌকা ভাসায়।

চল্লিশের কোটা পার হলে

একটু ভাবনার দরজা খোলে

যেতে হবে একদিন চলে

তখন পড়ে এ ভাবনায়।

খাটের ঘরে পা দিয়ে

অনেকটা দুর্বল হয়ে

আল্লাহমুখী হতে চায়।

সঠিক গান

 

ফুল পাখি ভালবাসি

​আলো দেয় রবি শশী

সকলই তোমার দান

হে চির কল্যাণ ও মহান।।

গাছ যোগায় ফুল ও ফল

মাছে ভর্তি নদীর জল

সাগর রাখছ করে অতল

নি:শ্বাস নেই বাতাসে বাঁচে প্রাণ।।

সাজাইছ পাহাড় থরে বিথরে

সোনা থাকে মাটির ভিতরে

মাটি দেয় ফসল গোয়ালা ভরে

তৃপ্তি অতৃপ্তির ঢেঁকুর তুলি হয়ে বলিয়ান।।

কি বলে করি শেষ

তোমারই দান সবিশেষ

আমিতো নগণ্য অশেষ

ইচ্ছা থাকলে ও পারি না গাইতে সঠিক গান।।

কবিতা

মিজানুর রহমান মিজান

সিলেট, বাংলাদেশ

সুখে থাক
 

তোমাকে ভালবাসি এ কথা জেনেও যদি
থাক দুরে সুখি হও থাকবে কেন অনাবাদি।
আমার কাছে না এসে সুখি যদি হও
চিরদিন সুখে থেকো সুখ খুঁজে নেও।
তোমার মনে স্থায়ী আসন দাও তাকে
সমব্যথী হবে যে অনন্তকাল তোমার ডাকে।
ভালবাসা উজাড় করে দিয়েছি, নাওনই
চাইবে একদিন অবশ্যই দেখবে আমি ক্ষমতাহীন।
কুঠারাঘাতে জর্জরিত করলে হৃদয় পিঞ্জর
ও পাষাণী ও নন্দিনী সুখে থাকো এ কামনা নিরন্তর।

সভ্যতার কান্না

 

মি আজ প্রতিষ্ঠিত

যেহেতু আমি মহানন্দে ভালবাসতাম

পাপ ও পাপীকে

সত্যের আচরণ টেনে করেছি অভিনয়

কিন্তু অসত্যের নগ্ন পায়েই আমার যাত্রা।

ঘৃণা করেছি হৃদয়ের কোমল বৃত্তিকে

কেননা ওটা বাউলের স্বভাব।

কামনা ছিল নিষ্ঠুর পৈশাচিকতায়

মানবের চরম পরিণতি

আমার সৌভাগ্যের চাবিকাঠি।

তাই তোমাদের মাঝে 

আমি আজ প্রতিষ্ঠিত।

সরলা

 

জীবনে বড় জ্বালা

দু:খ চিন্তায় গেল বেলা।। রে কালা……

আপন ভাবলাম যারে

সে যে অঙ্গার দেহ করে

তবু মিঠে না সাধ তার বেলা।। রে কালা…..

ভাল কাজ করতে চাইলে

হিংসার আগুনে পুড়ে জ্বলে

পদে পদে বাঁধা ডিঙ্গাই একেলা।। রে কালা…..

ভেবে দেখি মনে প্রাণে

মই দেইনিতো পাকা ধানে

তবু বিষের তীর মারে সরলা।। রে কালা…..

চাঁদে জোছনার আলো

নিত্যদিন ভোরে উদয় পূর্বাকাশে

ঘুম তাড়িয়ে আলোঝলমল বেশে

ছড়াও মিষ্টি রোদের আলো।।

দিনমান চলো হেঁটে হেঁটে

প্রখরতা কড়া কখনও বা মিটে

রাঙিয়ে আকাশ ভুবন ভালো।।

স্রোতের মতো গড়াও হাসি

হাঁটে মাঠে ঘাটে রাশি রাশি

সাজুগুজু নিপুণ ঝলোমলো।।

স্বপ্নময় ছবি আঁকো রাতদিন

ঘুমালে রাতে পৃথিবীর বাড়ে চিনচিন

সূর্যিমামা ফোটাও চাঁদে জোছনার আলো।।

স্মৃতি আয়নায় দেখা


শৈশব কাটে সকলের মুক্ত স্বাধীন
ডানা মেলে নীল আকাশে আনন্দ অন্তহীন।
নাই দায়িত্ব, কর্তব্যবোধ শুধু বয়ে চলা
নদী সমতুল লক্ষ্য সাগরে মেলা
দুই তীরে যোগায় উর্বরতা তাড়ায় পুষ্টিহীন।
শৈশবে লজ্জা থাকে একটু বেশি পরিমাণে
যৌবনে ভারসাম্য বজায় রাখতে সে জানে
বার্ধক্যে মিতব্যয়ী দূরদর্শী ধারণা সমীচীন।
শেষ বেলা স্মৃতি আয়নায় দেখা
কৈশোর কাল মধুরতম নয় অদেখা
যৌবন কাল যন্ত্রণাদায়ক রোগী পথ্যহীন।

বিবেচনা
 

ন্ধুর প্রেমে মন মজাইয়া
কি করলাম পাই না ভাবিয়া। 
ছাডিয়া গেল বানাইয়া দেওয়ানা।
পাইয়া আশ্বাস
নিলাম নি:শ্বাস
করল সর্বনাশ
এ তোমার বিবেচনা।   
প্রেমের পাঠশালাতে 
ভর্তি হলাম যবে তাতে 
লোভে মত্ত করে সাথে 
পিছন ফিরে তাকাইল না। 
এত পাষাণ হিয়া 
আমার সকল নিয়া 
গেল ত্যাজ্য করিয়া
পাপ পূণ্যের ধার ধারে না। 

কড়া নাড়ে

 

দু’টি ডালে দু’টি পাখি ছিল ভিন্ন ভিন্ন

যুগল জীবনে মায়ার বাধঁন হচ্ছে নাতো ছিন্ন।

বিয়ের বয়স আসে যখন বর ও কন্যার

লাজুক লাজুক কথা বলে ফুটে হাসি বন্যার।

রঙ্গিন চোখে দুনিয়া দেখে বাজে মধুর বিন

প্রত্যাশায় সময় কাটে নাচে তা ধিন ধিন

অপূর্ব বাঁধনে গড়ে নীড় মধুর ভালবাসায়

সংখ্যা তত্ত্বের দুই থেকে অধিক হয় বংশ পরস্পরায়।

সুখ শান্তি আনন্দ বয়ে যাক চিরদিন

পুষ্পিত বাগানে সৌরভ ছড়িয়ে হোক অমলিন।

খোদার কাছে মিনতি জানাই করজোড়ে

দয়া, মায়া ভালবাসা সর্বদা যেন কড়া নাড়ে।

সুহৃদ স্বজ্জনে

 

বাবার কথা হলে স্মরণে

অঝোর ধারায় বৃষ্টি ঝরে দু’নয়নে।।

বটবৃক্ষের ছায়া ছিলে জীবনে

হারিয়ে কাঁদি ঘুরি বনে বনে

খুঁজি আদর্শ অনন্যে।।

সরল সোজা পথ ছিল ধ্যানে

আঁকড়ে সে আদর্শ গেলে অবসানে

আছি মশগুল সর্বদা অনুকরণে।।

মানুষকে ভালবেসে আনন্দ দিলে গানে গানে

আজো ভক্ত অনুরাগী ভাবে নন্দনে

জান্নাত কামনা সাথে নিয়ে সুহৃদ স্বজ্জনে।।

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতা

বুবাই হাজরা 

প্রাপ্তি

নিরন্তর কোলাহল শূণ্যতা খোঁজে 

এক পশলা বৃষ্টিও পড়তে চায় নিজে​

অন্ধকারের চাদরে মোড়া নীরবতা

একান্তে তৃষ্ণা মেটায় গভীর শূণ্যতা

সমুদ্রের বুকে আছড়ে পড়া ঢেউ

সুখময়ের ঠিকানা করে নেয় কেউ

ঝোড়ো হাওয়ার ক্লান্তি অবসাদ

গুড়িয়ে দিয়ে নবনির্মিত রাজপ্রাসাদ

কোকিলের কণ্ঠস্বর দিনের জানলায়

সুপ্রভাতের আগমন বার্তা জানাতে চায়

রেশমের পোষাকের বন্দীরত উষ্ণতা

রবির আগমনে পায় খোঁজে মলিনতা

প্রাপ্তি রোগে আক্রান্ত প্রকৃতি হইতে মানব

সরলতায় না মিলিলে হতে পারে দানব

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতা

বলাশাদমান আক্তার

বিবেকের...

আমি তোমার কান্না ভেজা কবিতায়

আমি তোমার আজব ভাঙা শহরটায়

আমি তোমার মিষ্টি হারানো সময়টায়

সারাক্ষণ তোমাকে দেখি 

আর তোমাকে হাসাই

কে বলে তুমি হাসতে পারো না

এই তো হাসছো তুমি…… বিলীন যন্ত্রণা

কেন বুঝেও নাবুঝের অভিনয়

সে তো আজ আর তোমার নয়

দূর থেকে বয়ে আসা বাতাসের

ইচ্ছে তোমাকে উড়িয়ে নিবার

বৃষ্টি নেমেছে মাত্র যাও না তুমি  

দরজার বাহিরে ডাকছে দুষ্টামি। 

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতা

বুবাই হাজরা 

প্রাপ্তি

নিরন্তর কোলাহল শূণ্যতা খোঁজে 

এক পশলা বৃষ্টিও পড়তে চায় নিজে​

অন্ধকারের চাদরে মোড়া নীরবতা

একান্তে তৃষ্ণা মেটায় গভীর শূণ্যতা

সমুদ্রের বুকে আছড়ে পড়া ঢেউ

সুখময়ের ঠিকানা করে নেয় কেউ

ঝোড়ো হাওয়ার ক্লান্তি অবসাদ

গুড়িয়ে দিয়ে নবনির্মিত রাজপ্রাসাদ

কোকিলের কণ্ঠস্বর দিনের জানলায়

সুপ্রভাতের আগমন বার্তা জানাতে চায়

রেশমের পোষাকের বন্দীরত উষ্ণতা

রবির আগমনে পায় খোঁজে মলিনতা

প্রাপ্তি রোগে আক্রান্ত প্রকৃতি হইতে মানব

সরলতায় না মিলিলে হতে পারে দানব

 কবিতায়ন ।। মতামত ।। সূচীপত্র

কবিতা

বলাশাদমান আক্তার

বিবেকের...

আমি তোমার কান্না ভেজা কবিতায়

আমি তোমার আজব ভাঙা শহরটায়

আমি তোমার মিষ্টি হারানো সময়টায়

সারাক্ষণ তোমাকে দেখি 

আর তোমাকে হাসাই

কে বলে তুমি হাসতে পারো না

এই তো হাসছো তুমি…… বিলীন যন্ত্রণা

কেন বুঝেও নাবুঝের অভিনয়

সে তো আজ আর তোমার নয়

দূর থেকে বয়ে আসা বাতাসের

ইচ্ছে তোমাকে উড়িয়ে নিবার

বৃষ্টি নেমেছে মাত্র যাও না তুমি  

দরজার বাহিরে ডাকছে দুষ্টামি। 

সঞ্জয় বিশ্বাস​

নববর্ষা

আবার শ্রাবণ এল ঘনঘটায় 
নিয়ে এল সেই বিষাদ 
আর সাথে ব​য়ে চলা স্বপ্ন ভেলা। 
রিম ঝিম ঝিম নূপুরের আওয়াজ। 

এবার এই নববর্ষায় নিজেকে ভাসাব না, 
শুদ্ধ করে নেব যত অব্যর্থ প্রেম। 
ভেজাবো নিজেকে, ভিজিয়ে নেব স্বপ্নের অতীত। 
ভিজিয়ে নেব বুকের পাঁজরের রুদ্ধ দীর্ঘশ্বাস। 

এবার, শ্রাবণ কে বানাবো নর্তকী 
সারাদিন আদরে আদরে ভাসাব এ পৃথ্বী। 
ঝম ঝম, ছল ছল ধ্বনি বাজবে সর্বদা, 
কদম ফুলে সাজিয়ে দেব এবারের নববর্ষা।

সায়নিকা দাস

দোসর

চায়ের ভাঁড়ে শেষ চুমুক, হাওয়ায় লাস্ট কাউন্টারের ধোঁয়া,

শহুরে ক্লান্তির মাঝে তোর গলার আওয়াজ...

Love-lust এর দ্বন্দ্বে তোর শান্ত প্রতিক্রিয়া,

আমার অসম্ভব তর্কে, চিবুক ছুঁইয়ে হাতে তোর অপলক দৃষ্টি দেখা...

আমার স্মৃতির ভিড়ে তোর এক টুকরো হাসি,

আমার প্রেমের বিরতিতে তোর বিনোদন মাখানো গল্প...

আমার পায়ের ছন্দে তোর নানান গল্প লেখা,

আমার কবিতার দ্বন্দ্বে তোর নির্দ্বিধায় পায়ে পা মেলানো...

নাগরিক হিংস্রতায় এক মুঠো শান্তি পাই তোর পাশে হাঁটলে,

তোর মুখে নাটুকে কথাও শুনতে লাগে বেশ রোমাঞ্চকর...

রোজ কিছু মানুষের ভালবাসা যখন পড়ে থাকে রাস্তায়,

সেই দেখে ভয়ে কুঁকড়ে গিয়ে চেপে ধরি তোর হাত, তখন তুই সেই কষ্টেও ভাগ বসাস...

কারণ? মনে আছ হে সখ তোর নাম রেখেছিলাম দোসর। 

সৌভনিক চক্রবর্তী

পূর্ব বিবেকানন্দ পল্লী, শিলিগুড়ি

আমার পাগলী

আমার যখন ভীষণ অভিমান হয়

ভাবি ঐ বুঝি আকাশটা কাঁদবে

আমার যখন ভীষণ ভাল লাগে মনে

ভাবি ঐ বুঝি নদী কাছে ডাকবে।

 

স্রোতস্বিনী গঙ্গা যখন আপন বেগে

অজানার পথে বইছে

মনে হয় পাগলী আমার না জানা

কত কথা যে কইছে।

 

মেঘলা দুপুরে যখন সূর্যের মুখটা

থাকে থমথমে ভার

মনে হয় পাগলী আমার রাগটা ভারি

তাই তো অন্ধকার।

 

মাঝে মাঝে ঋতু – মন্দিরা ফোন করে বলে

‘চলে আয় না – ভারি হয়েছে না তোর পা’

বলতো কেমন করে বোঝাই ‘ওরে – পাগলী –

তো সেই আমার বিদেহী প্রেমিকা’।

 

ঋদ্ধিমান মাঝে মাঝেই বলে এই বল না বাপু

তোর পাগলী থাকে কোথায়?

বলতো বাপু কেমন করে বোঝাই তোকে

পাগলী আমায় জড়িয়ে আছে ব্যথায়।

river.jpg
river.jpg

ধূসর

সাদা কিম্বা কালো
আঁধার নয়ত আলো
এস্‌পার কি ওস্‌পার
এধার অথবা ওধার


আমি কিন্তু ভাই এসবের মাঝে একটু ছোট্ট অবকাশের ফাঁকে সবুজ ঘাসের আগায় ফড়িঙের মতো দুলছি আর দুলছি আর দুলছি।

bottom of page